আবার এখন ফলের চেয়ে শাক-সবজির দাম বেশি। সবজি ও ফলের কয়েকটি দোকানে ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি ধনেপাতা ৪০০ থেকে ৫০০ রুপি হাঁকছেন খুচরা বিক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, টানা বৃষ্টির অজুহাতে শুধু ধনেপাতাই নয়, পটল-ঢেঁড়সসহ সব ধরনের শাক-সবজির দামই চড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, লক্ষ্মীপূজা থেকে কালীপূজা-ভাইফোঁটার এ সময়টাতে বাজার একটু চড়া থাকে প্রতি বছরই। কিন্তু এবার আরও বেশি দাম হাঁকছেন খুচরা বিক্রেতারা। চাষি ও পাইকারি বিক্রেতারাও দাম বাড়ার পেছনে তাদেরকেই দায়ী করছেন।
সরেজমিনে কলকাতার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শিয়ালদহের কোলে মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, বরবটির পাইকারি দর কেজিপ্রতি ৩৫ রুপি। অথচ খুচরা বাজারে সে দাম গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ৪৫ রুপিতে। পাইকারিতে ঢেঁড়স ৪২ রুপি ও পটল ২৮-৩০ রুপি বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে কেজিতে ১০-২০ রুপি বেড়ে যাচ্ছে। কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ ১৩০ থেকে ১৪০ রুপি দরে কিনতে হচ্ছে খুচরো বাজার থেকে।
মাছের ক্ষেত্রেও পাইকারির সঙ্গে খুচরা বাজারের বিস্তর ফারাক। এক কেজি সাইজের রুই যেখানে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ রুপিতে, সেখানে খুচরো বাজারে ওই মাছই হাতবদল হচ্ছে ১৮০ থেকে ২১০ রুপিতে। দুই কেজি সাইজের কাতলার পাইকারি দাম কেজিতে ১৭০ রুপি হলেও খুচরা বাজারে ৩০০ থেকে ৩৫০ রুপির কমে বিক্রি হচ্ছে না। দেশি কই, মাগুর ও শিং মিলছে না ৫০০ থেকে ৬০০ রুপির নিচে। বাটা, মলা, পুঁটিসহ ছোট মাছ প্রায় দুর্লভই হয়ে গেছে।
হাওড়ার চাষি বাবলু বিশ্বাস ও দুর্জয় বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে বেশি দাম নিচ্ছেন। তাদের প্রতি প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।
পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী দেবাশিস সাহা বলেন, ‘পাইকারি বাজারে মাছের দাম খুব একটা বেশি নয়। কিন্তু খুচরা বিক্রেতাদের ওপর আমাদের বা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও এ সময়টায় চাহিদা থাকায় যে যার মতো দর হাঁকছেন’।
তবে মুরগি ও গরুর মাংসের দামে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। কেজিপ্রতি ফার্মের মুরগি ১২০ রুপি ও দেশি মুরগি ১৪০-১৫০ রুপি এবং গরুর মাংস হাঁড়সহ ১৮০ রুপি ও হাঁড় ছাড়া ২১০ রুপিতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে খাসির মাংসের দর আকাশছোঁয়া, ৫২০ রুপির নিচে নেই।
বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের গড়া টাস্কফোর্সের দেখা মিলছে না বলেও অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
মুখ্যমন্ত্রীর টাস্কফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, শিগগিরই আবার টাস্কফোর্সের বৈঠক হবে। তার দাবি, টানা বর্ষণে প্রচুর সবজি নষ্ট হয়েছে। সে কারণেই দাম বেড়েছে, দু’একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু সাধারণ মানুষের বক্তব্য, এর মধ্যে এমন কোনো বৃষ্টি হয়নি যে, বাজারে এতো দাম বাড়বে। আসলে পূজার আগে-পরে বাঙালির রান্নাঘরে মেন্যুতে কিছুটা পরিবর্তন আসে। সে সুযোগই নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৭
ভিএস/এএসআর