থিম শিল্পী শুভময়ের কথায়, মানুষের সঙ্গে হলুদের অপরিসীম গুরত্ব বোঝাতেই এই ভাবনা। হলুদ আমরা রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি, বৈদিক যুগে চিকিৎসাশাস্ত্রের শুরু থেকে হলুদের গুরুত্ব অপরিসীম।
ঔষধশাস্ত্রে স্বাদে গন্ধে উন্নত হলেও মূল উপাদান কিন্তু সেই হলুদ। এছাড়া মাথায় হলুদের তিলক বা গায়ে হলুদের মত সমাজের শুভ অনুষ্ঠানে হলুদের ব্যবহার অপরিহার্য। অবশ্য এর পিছনেই সেই ঔষধি গুণই মূল বিষয়। যাতে শুভ কাজের আগে রোগমুক্ত থাকা যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানাগুণ সম্পন্ন হলুদই এবারে আমাদের থিমের ভাবনায়। সেজন্যই আমরা গোট হলুদ এবং গুঁড়ো হলুদ মণ্ডপে ব্যবহার করেছি। এই মণ্ডপটা সাজিয়ে তুলতে হলুদ লেগেছে চার টনের বেশি। যা স্পনসর করেছে ভারতবর্ষের বিখ্যাত মসলা প্রস্তুতকারক সংস্থা জে কে মশলা। পুরো মণ্ডপে হলুদের একটা গন্ধ পাবেন। ভারতে এই প্রথম দুর্গাপূজার ইতিহাসে গোটা একটা মণ্ডপ হলুদ দিয়ে সাজানো হয়েছে।
এখানে দেবীর হাতে অস্ত্র নেই কেন? শিল্পীর কথায়, এখানে মা দুর্গা যুদ্ধংদেহি রূপে নয়। মা এখানে সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণা রুপে বিরাজ করছেন। লেজার লাইটের মাধ্যমে দেখানো হবে মা যখন দেবীদুর্গা থেকে অন্নপূর্ণা রূপ নিচ্ছে। এই জন্য মণ্ডপের মাঝখানে মায়ের হেসেল অর্থাৎ রান্নাঘর করা হয়েছে। রাখা হয়েছে প্রকাণ্ড একটা উনুন আর তার উপর মস্ত একটা হাঁড়ি। যেখানে রান্না হচ্ছে আর উপর থেকে বৃষ্টির মতন হলুদ পড়ছে। আর তার চারপাশে ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস ঘোরাঘুরি করছে। হলুদের কারণে সেসব ভাইরাস হাড়িতে পড়তে পারছে না।
এই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস এখানে নেগেটিভ এনার্জি বা অসুর আর হলুদ হলো পজিটিভ এনার্জি অর্থাৎ শুভশক্তি। মা দুর্গা তো শুভ শক্তির প্রতীক। মা যখন মহিষাসুরকে বিনাশ করে তখন অশুভ শক্তিকেই বিনাশ করে শুভ শক্তির আলো ছড়িয়ে দেয়। অবশ্য এখনো কাজ শেষ হয়নি। দর্শনার্থীর জন্য মণ্ডপ খোলা হবে আর দিন দুয়েক বাদে।
প্রতিমা শিল্পী পরিমল পালের ভাষ্যমতে, হলুদ যেমন আমদের রান্নায় পজিটিভ এনার্জির কাজ করে আর আমাদের মা-দাদিরাই হলো অন্নপূর্ণা। হলুদের একাধিক গুণই আমরা তুলে ধরেছি এবারে আমাদের ভাবনায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৮
ভিএস/এমএ