ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বৃষ্টি নেই কলকাতায়, ভাসছে উত্তর-পূর্ব ভারত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
বৃষ্টি নেই কলকাতায়, ভাসছে উত্তর-পূর্ব ভারত

কলকাতা: আনুষ্ঠানিকভাবে শনিবার (১৮ জুন) বর্ষা ঢুকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের বেশিরভাগ জেলায়। যদিও উত্তরবঙ্গে আগেই ঢুকেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু।

তার জেরে সেখানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার আগমণ ঘটলেও জেলাগুলিতে সেরকম বৃষ্টির সম্ভাবনা এখনই নেই।

রোবাবার (১৯ জুন) কলকাতা আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলায় মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করেছে। রাজ্যের দক্ষিণের কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতার আকাশ মেঘলা থাকবে, হতে পারে হালকা বৃষ্টি। আপাতত কলকাতায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আকাশ মেঘলা থাকলেও আগামী ২-৩ দিন দক্ষিণবঙ্গে হালকা বৃষ্টি হবে। তবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূমের দুয়েক জায়গাতে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সোমবারের (২০ জুন) পর থেকে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বৃষ্টি বাড়বে।

তবে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় এদিনও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি রেখেছে আবহাওয়া দফতর। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকায় ধস, তিস্তা-জলঢাকাসহ অন্যান্য নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি, কৃষিকাজের ক্ষতিসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আগাম সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

মূলত, এবার বর্ষা কিছুটা দেরিতেই শৃরৃ হয়েছে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে। এদিন আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তা গণেশ দাস জানান, এরকম ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। কয়েক বছর আগে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার আগমণ হয়েছিল ২১ জুন। তবে তারপর থেকে সাধারণত ৮ থেকে ১০ জুনের মধ্যেই মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করেছিল। এবার গত ৩ জুন রাজ্যের উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ জেলাতেই বর্ষা শুরু হয়েছে।

এদিকে, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে বন্যা পরিস্থিতি। প্রবল বর্ষণের জেরে পানি ঢুকছে বিস্তীর্ণ এলাকায়। ফলে প্রতিদিন ঘরছাড়া হচ্ছেন বহু মানুষ। গ্রামে গ্রামে নদীর পানি ঢুকে ফসলেরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ভূমিধসের জেরেও প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এখনও ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র নদের মতো উত্তর-পূর্বের প্রধান নদীগুলি। আগামীদিনে কী হতে চলেছে তা ভেবে উৎকণ্ঠায় আছেন বহু মানুষ।

তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি আসাম ও মেঘালয়ে। ত্রিপুরাতেও পরিস্থিতি ধীরে ধীরে খারাপের দিকেই যাচ্ছে।   এ পর্যন্ত উত্তর-পূর্বের সব রাজ্য মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেনর। উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে রাজ্যগুলি। এক সপ্তাহেই আসাম ও মেঘালয় মিলিয়ে মোট ৪২ জন বন্যায় মারা গেছেন।

শুক্রবার (১৭ জুন) থেকে টানা বৃষ্টি হয়ে চলেছে ত্রিপুরায়। এতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে এই বছর। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে মেঘালয়ের মৌসিনরাম ও চেরাপুঞ্জিতেও।

বন্যায় নিহতদের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে মেঘালয় প্রশাসন। আসামে এখনো বন্যায় ভাসছে ৪ হাজার গ্রাম। ৫১৪টি আশ্রয় শিবিরে প্রায় দেড় লাখ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে ফোনে ত্রাণ ও উদ্ধার সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী আরও ৪-৫ দিন আসাম, মেঘালয়, মনিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবাহাওয়া দফতর।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।