‘নতুন প্রজন্মের জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থিম নিয়ে ঢাকার শের-এ-বাংলা নগরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৩০ অক্টোবর থেকে শুরু হলো চার দিনব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি অঙ্গনের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা। এ প্রদর্শনীর আয়োজক বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস)।
৩০ অক্টোবর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজার সভাকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষনা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার এবং বিসিএস মহাসচিব ও বিসিএসআইসিটিওয়ার্ল্ড২০১০ প্রদর্শনীর আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান স্বপন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখনও বর্তমান সরকার পুরোপুরি ই-গভর্ন্যান্সে যেতে না পারলেও এ কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। দেশের সফটওয়্যার খাতও এগোচ্ছে। সব মিলিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রযুক্তিই হচ্ছে প্রধান শক্তি। এ কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নিতে মন্ত্রণালয়ের সব কর্মীকে প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই ইউনিয়ন ইনফরমেশন সার্ভিস সেন্টার (ইউআইএসসি) চালু করার কাজ এগিয়ে চলছে।
অনুষ্ঠানে কিউবি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেরি মবস জানান, সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য তারহীন দ্রুতগতিসম্পন্ন ওয়াইম্যাক্স সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। অচিরেই সাধারণ মানুষ এর সুফল ভোগ করতে শুরু করবেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, বর্তমানে সরকারের কার্যক্রমে বোঝা যাচ্ছে সরকার সত্যিই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বে। এজন্য সরকারের নিজস্ব কর্মপদ্ধতিকে ডিজিটাল করতে হবে। সরকারের কার্যক্রম কাগজহীন করার মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুফল পাবে।
এ প্রদর্শনীর আহ্বায়ক ও বিসিএস মহাসচিব মজিবুর রহমান স্বপন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ সময়ে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যগণসহ পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বিসিএস ২০০৮ সাল থেকে ‘বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড’ শিরোনামে দেশের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। এবারের আয়োজনে বৈচিত্র্যময় ও জাঁকজমক প্রস্ততি নিয়েছে আয়োজক কমিটি।
উদ্বোধনের পর দুপুর ১২টার সময় অনেক স্টলের সাজসজ্জার কাজ চলছিল। তবে দুপুর গড়িয়ে বেলা দেড়টা পার হতেই প্রদর্শনী প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের সমাগম বাড়তে থাকে। প্রদর্শনীতে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ল্যাপটপ আর নোটবুক ঘিরেই আকর্ষণ লক্ষ করা যায়। প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রায় প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই নতুন আর স্বল্প দামের ল্যাপটপ বাজারে আসছে বলে বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্র জানিয়েছে।
আয়োজক সূত্র জানিয়েছে, এছাড়াও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী চীনের ইন্সপিউর গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) আলোচনায় সরাসরি অংশগ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, এ প্রদর্শনীতে দেশ-বিদেশের সুপরিচিত ব্র্যান্ড, আমদানিকারক, নির্মাতা এবং সরবরাহকারী সবমোট ৬৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা কমপিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার পণ্য, নেটওয়ার্ক ও ডাটা কমিউনিকেশন, টেলিকম সেবা ও পণ্যসামগ্রী, মাল্টিমিডিয়া, আইসিটি শিক্ষা উপকরণ, ল্যাপটপ, পামটপ, ডিজিটাল জীবনভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের আধুনিক সংস্করণ প্রদর্শন করবে। প্রদর্শনীর ৫০ হাজার বর্গফুট স্থানজুড়ে ৬৯টি স্টল এবং ২৬টি প্যাভিলিয়ন বসছে।
এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০টায় সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। একটানা রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। প্রবেশমূল্য ২০ টাকা। তবে স্কুল শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিনামূল্যে প্রদর্শনী উপভোগের সুযোগ পাবেন। তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক এ প্রদর্শনী আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৪১৮, অক্টোবর ৩০, ২০১০