তথ্যপ্রযুক্তির ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং নতুন সব উদ্ভাবনায় প্রতিনিয়তই এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। যেমন গাড়ি চলবে কিন্তু তাতে কোনো চালক থাকবে না, হাত নয় চোখ দিয়ে লেখা যাবে, ঘুড়ি উড়বে তবে পানির নিচে, মোবাইল চার্জ হবে বিদ্যুৎ বা ব্যাটারিতে নয় শরীরের তাপে।
এ বছর চমক লাগানো এমন হাজারো প্রযুক্তির আর্বিভাব হয়েছে। এসব প্রযুক্তি থেকে টাইম ম্যাগাজিন কর্তৃক নির্বাচিত ৫০টি প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনা থেকে প্রথম পর্বে উল্লেখ্যযোগ্য পাঁচটির তথ্য তুলে ধরা হলো।
লুক্সি:
লুক্সি হচ্ছে একটি ভিডিও ক্যামেরা যা বহনকারীর হাতে নয় কানে লাগানো থাকবে। ফলে বহনকারী যখন যেদিকে তাকাবে ক্যামেরাটি তাই রেকর্ড করতে থাকবে। এভাবে এটি একটানা পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত বহনকারীর পর্যবেক্ষণ রেকর্ড করতে পারে।
আগ্রহীরা ইচ্ছা করলে ক্যামেরায় তাৎক্ষণিকভাবে ধারণ করা ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও ফেসবুক বা ইউটিউবে সরাসরি আপলোড করতে পারবেন। অনেকটা হুজুগের বশেই এক অভিভাবক তার সন্তানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্মৃতি ধরে রাখতে এ ধরনের ক্যামেরা উদ্ভাবন করেন।
টেরেফুজিয়া ট্রান্সিশন:
এটি এমন একটি মোটরগাড়ি যা রাস্তায় চলতে পারে। আবার আকাশেও উড়তে পারে। আকাশে উড়ার জন্য গাড়িটিতে ডানাও লাগানো আছে। তবে তা প্রয়োজনে সংকোচন করা যায়। এ গাড়ি চলার গতি ঘণ্টায় ১০৫ মাইল। এ মুহূর্তে মূল্য দাম দুই লাখ ডলার। উল্লেখ্য, গাড়িটি এ বছর তৈরি হলেও ২০১১ সাল থেকে এর বাণিজ্যিক বিপণন শুরু হবে।
আইরাইটার:
যারা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী বা যাদের হাত অবশ তারাও এখন থেকে লিখতে পারবেন। এ বিষয়টি সম্ভব করেছে আইরাইটার। এর মাধ্যমে চোখে মনি নড়াচড়া করানো মাধ্যমেই লেখা যাবে। এজন্য একটি বিশেষ চশমা পড়তে হবে। এ চশমাতে বিশেষ ধরনের ক্যামেরা এবং সফটওয়্যার যুক্ত করা হয়েছে। যা চোখের মনি নড়াচড়াকে লেখায় রূপান্তর করবে।
ওয়াটারলেস ওয়াশিং মেশিন:
যদিও আমাদের দেশে কাপড় ধোঁয়ায় এখনও ঘরে ঘরে ওয়াশিং মেশিন সংস্কৃতি চালু হয়নি কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীরা প্রতিবছর ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোঁয়ায় ৩০ হাজার কোটি গ্যালন পানি ব্যয় করেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেরক্স এ তথ্য প্রকাশ করে।
আর এ বিপুল পরিমাণে পানির ব্যবহার রোধে তারা পানি ছাড়াই ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোঁয়ার প্রযুক্তি আবিস্কার করে। যা আাগমী বছর বাণিজ্যিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। তাদের ভাষ্যমতে, এ প্রযুক্তির ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারের ফলে পানির ব্যবহার শতকরা ৯০ ভাগ কমে যাবে।
ইংলিশ টিচিং রোবট:
এ বছরের আরেক যুগান্তকারী আবিস্কার হচ্ছে ইংলিশ টিচিং রোবট। অর্থাৎ ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ায় শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবে রোবট। দক্ষিণ কোরিয়ার স্কুলগুলোতে ইংরেজি শিক্ষার মানোন্নয়নে এ রোবটের আবির্ভাব।
এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে রোবটটি কয়েকটি স্কুলের শিশুদের ইংরেজি শিক্ষাদান করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। আর এ বছরের শেষভাগে দক্ষিণ কোরিয়ার ১৮টি স্কুলে এ ইংলিশ টিচিং রোবট পাঠানো হবে।
প্রযুক্তিনির্ভর এ উদ্ভাবনাগুলো ছাড়াও আইপ্যাড, ইলেকট্রনিক পা, ত্রিমাত্রিক বায়োপ্রিন্টার, ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তির চলচ্চিত্র অ্যাভাটার, বিশেষ চশমা ছাড়াও ত্রিমাত্রিক টিভি দেখার প্রযুক্তিগুলো ২০১০ সালের শীর্ষ উদ্ভাবনার তালিকায় নিবন্ধিত হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১২১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১০