ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ঈশ্বরকণ‍াই হবে মহাবিশ্ব ধ্বংসের কারণ!

শুভ্রনীল সাগর, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৪
ঈশ্বরকণ‍াই হবে মহাবিশ্ব ধ্বংসের কারণ!

ঢাকা: ‘ঈশ্বর কণা’ আবিষ্কারের চেষ্টাই হতে পারে মহাবিশ্ব ধ্বংসের কারণ! আর এই সতর্কবাণী যখন শোনান বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস, তখন বিষয়টি আমলে নিতেই হয়।

কী এই ঈশ্বর কণা? এর উত্তর পেতে গেলে আমাদের তাকাতে হবে একটু পিছে ফিরে।

 

২০১২ সাল থেকেই বিজ্ঞানের ‘গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ চলছে সার্ন-এ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কণা পদার্থবিজ্ঞানের (পার্টিকল ফিজিক্স) এই গবেষণাগারে চলছে মহাবিশ্ব ও প্রাণ সৃষ্টির রহস্য খোঁজার কাজ। ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডের সীমান্তে অবস্থিত গবেষণাগারটি সংক্ষেপে ‘সার্ন’ নামে পরিচিত।

গত দুই বছর ধরে সার্নে বিশেষ এক পরীক্ষার মাধ্যমে ঈশ্বর কণা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। পৃথিবীর সব ঝানু বিজ্ঞানীরা যোগ দিয়েছেন এ পরীক্ষায়।

সহজে বললে, ইলেকট্রন, প্রোটন ‍ও নিউট্রন- এই প্রধান তিন উপাদান নিয়ে পরমাণু গঠিত। বিশেষ এ পরীক্ষায় আছে গোলাকার একটি বায়ুরোধী টানেল। যার নাম লার্জ হেড্রন কলাইডার (এলএইচসি)। এলএইচসি’র এক দিক থেকে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে আসবে প্রোটন কণা। অন্য দিক দিয়ে সমান গতিতে নিউট্রন কণা ছুটে আসবে।

দুই কণার সংঘর্ষের ফলে স‍ৃষ্টি হবে একটি বিশেষ মুহূর্তের। এই বিশেষ মুহূর্তের স্থায়িত্বকাল এক সেকেন্ডের নয় হাজার ভাগের এক ভাগ।

বিজ্ঞান বলছে, মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদিতে অর্থাৎ ‘বিগ ব্যাঙ’ বিস্ফোরণের সময় একইরকম মুহূর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। একইভাবে এই পরীক্ষার মূল লক্ষ্য, সেই আদি মুহূর্তের কৃত্রিম অবস্থা সৃষ্টি করা। আর সঠিকভাবে সময়টি ধরা গেলে সমাধান হবে সৃষ্টি রহস্য।

এই অতি সূক্ষ্ম সময়টা বিজ্ঞানীরা ধরতে চান। তারা ধারণা করছেন, শুধু এই সময়েই ধরা দেবে ‘গড পার্টিকল’ বা ঈশ্বরকণা। যা কিনা বিগ ব্যাঙয়েরও আদি অবস্থা। বিগ ব্যাং বা মহা বিস্ফোরণও ঘটেছিল এরকম একটি কণা থেকে। ঈশ্বরকণার বৈজ্ঞানিক নাম আসলে ‘হিগস বোসন’। ঈশ্বরকণা এটির ডাক নাম।

ফিরে আসি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক ড. হকিংসের কথায়। বলছেন, উচ্চ শক্তিসম্পন্ন হিগস বোসনের কারণে হঠা‍ৎ করেই কোনো বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এর ফলে ধসে পড়তে পারে স্থান ও কাল। এই কণা ১০০ বিলিয়ন গিগা-ইলেক্ট্রন-ভোণ্টের কাছাকছি শক্তি ধারণ করতে পারে।

গোটা মহাবিশ্বকে আকার দেওয়‍া এ ঈশ্বর কণা, একটি মহাজাগতিক শূন্যতা বিপর্যয়েরও কারণ হতে পারে বলে যোগ করেন ড. হকিংস।
 
স্বাভাবিকভাবেই হকিংসের সতর্কবাণী চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের। পুরো বিষয়টি নিয়েই নতুন করে ভাবতে বসেছেন তারা।

সার্নের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক জন এলিস জানান, একটি বিষয় পরিষ্কার থাকা উচিত, হিগস বোসনের তুলনায় এলএইসির শক্তি ধারণ ক্ষমতা অনেক কম।
 
ড. হকিংসের সতর্কবাণী দিয়ে শুরু হয়েছিল লেখা। তার কথা দিয়েই শেষ করা যাক- যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, কিন্তু এটার আসাটা আমরা দেখতে পাবো না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।