ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

অনলাইন মিডিয়ার নীতিমালা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
অনলাইন মিডিয়ার নীতিমালা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: প্রযুক্তির কল্যাণে সংবাদমাধ্যমে এসেছে বিরাট পরিবর্তন। সচেতন পাঠকদের এখন অন্তত খবরের জন্য পরের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

বিশ্বায়নের এই যুগে মানুষ এখন মুহূর্তের খবর মুহূর্তে পেয়ে যাচ্ছেন প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে। রাষ্ট্রীয়ভাবে অনলাইন মিডিয়ার জন্য নীতিমালা ও পৃষ্ঠপোষকতা এখন সময়ের দাবি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার কার্যালয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন।  

এ সময় তিনি বলেন, ৫ বছর আগেও মানুষ ইন্টারনেট বা অনলাইন এতো বুঝতো না। মোবাইল এবং ইন্টারনেট হাতের নাগালে চলে আসায় মানুষের জানার আগ্রহও এখন ভীষণভাবে বেড়ে গেছে। পাঠকের এই আগ্রহ পূরণ করছে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো।

তবে প্রিন্ট মিডিয়ারও গুরুত্ব ও আবেদন আছে এবং থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খুবি উপাচার্য বলেন, বিশ্বব্যাপী মিডিয়ার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে এ বছর থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা (ম্যাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম) ডিসিপ্লিন (বিভাগ) চালু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এ ডিসিপ্লিন চালু করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে খুলনাঞ্চলের সাংবাদিকতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
Khulna_university_VC_02
তিনি আশা করেন, খুবির সাংবাদিকতা বিভাগে যারা ভর্তি হবে তাদের অনেকেই প্রথম অথবা দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই সাংবাদিকতা শুরু করতে পারবে। আর তুলে ধরতে পারবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা খবরাখবর।

তিনি জানান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের পাশাপাশি এ বছর মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা (হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সংক্ষেপে এইচআরএম) নামে আর একটি ডিসিপ্লিন শুরু করা হয়েছে। যার  মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানব সম্পদ উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কতটি বিভাগ রয়েছে জানতে চাইলে ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি স্কুলের (অনুষদ) অধীনে ২১টি ডিসিপ্লিন (বিভাগ) এবং একটি ইনস্টিটিউটের (চারুকলা) অধীনে ৩টি ডিসিপ্লিনে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নতুন দুটি ডিসিপ্লিন চালু হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬টিতে। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত ব্যাচেলর ডিগ্রি, ব্যাচেলর অব অনার্স ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি, এম ফিল ও পিএইচডি দেওয়া হয়। খুবির শিক্ষার গুণগত মানের উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর থেকেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গবেষণা ইস্টিটিউট চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।  

তিনি বলেন, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে  সময় উপযোগী শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। অনেক আগেই খুবিকে ওয়াইফাই জোনের আওতায় আনা হয়েছে।

তিনি জানান, খুবির পঞ্চম সমাবর্তন আগামী ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করতে সম্মত হয়েছেন।

উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ও বহুজাতিক গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশসেবা করছেন। এছাড়া বহি:বিশ্বেও তারা তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ছাত্রছাত্রীদের কর্ম সংস্থানের কোনো সমস্যা হয় না।
তিনি বলেন,  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও শিক্ষার পরিবেশ ভালো  থাকায় ছাত্রছাত্রীদের দিন দিন খুবির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।

খুবি উপাচার্য বলেন, রাজনৈতিক চর্চা দেশের প্রত্যেকটা মানুষ কম বেশি করে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকরাও রাজনৈতিকভাবে সচেতন। তবে কেউ প্রকাশ্যে রাজনীতি করেন না। যার কারণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় না।
Khulna_university_VC_01
সেশনজট, সন্ত্রাস ও রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মডেল বলে উল্লেখ করেন ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।

উল্লেখ্য, খুলনার ময়ূর নদীর পাশে ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারি সিদ্ধান্ত গেজেটে প্রকাশ হয়। ১৯৯০ সালের জুন মাসে জাতীয় সংসদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয়, যা গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ওই বছর ৩১ জুলাই।

১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট প্রথম ওরিয়েন্টেশন ও ৩১ আগস্ট ক্লাস শুরুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। পরে একই বছরের ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এমআরএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।