ঢাকা: শেখ রাসেলের স্মৃতি স্মরণে সারাদেশের স্কুলে দুই হাজার কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রোববার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে শিশু সাংবাদিকদের ল্যাপটপ বিতরণ ও কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
আইসিটি ডিভিশন, এক্সিম ব্যাংক ও হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহযোগিতায় বিসিসি এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, পচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ট পুত্র শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছিল। সেই সময়ের ইতিহাস শিশুদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে দুই হাজার স্কুলে শেখ রাসেল কম্পিউটার ল্যাব করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রত্যন্ত উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এক গবেষণায় দেখা গেছে, আগামী ৫ বছরে ইউরোপ ও আমেরিকায় প্রায় ১২ লাখ প্রোগ্রামার দরকার হবে। কিন্তু তাদের সেই সংখ্যক কর্মক্ষম যুব সমাজ নেই। বাংলাদেশের প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন এই তরুণ সমাজ সেখানে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। এছাড়া তরুণরা সারাবিশ্বের প্রযুক্তি দুনিয়ায় নেতৃত্ব দেবে।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সব শিশুর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়ার অঙ্গীকার করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
শিশু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের পাশে থাকা দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের খুঁজে বের করতে হবে। একটি ল্যাপটপ বা ডিভাইসের অভাবে যেন কোনো শিশুর স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত না হয়।
এসময় তিনি দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের খবর সংগ্রহ করে আইসিটি ডিভিশন ও এক্সিম ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
পলক বলেন, তোমরা তোমাদের সততা, মেধা ও সাহস দিয়ে সারা বাংলাদেশের দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের মাধ্যমে ইতিহাস রচনা করতে পারো। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সৈনিক হিসেবে নিজেরা এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পারো।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিশু সাংবাদিকদের তথ্যপ্রযুক্তি প্রণোদনা’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানে সারা দেশের ৭৯ জন শিশু সাংবাদিকের হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন প্রতিমন্ত্রী।
শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিয়ে পলক বলেন, বিল গেটস কিন্তু একটি কম্পিউটার দিয়েই পৃথিবী বদলে দিয়েছিলেন, তোমরা একটি ল্যাপটপ দিয়ে সমাজ, পুরো দেশ ও পৃথিবীকে পরিবর্তন করে দিতে পারো।
বর্তমান সরকারের ২০২১ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের মাধ্যমে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্বও থাকবে তোমাদের হাতে।
অনুষ্ঠানে এক্সিম ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিএমডি) খন্দকার রুমী এহসানুল হক বলেন, নিজেদের স্বপ্নটা লালন করে সুন্দর দেশ গড়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। তোমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘ওয়ান ল্যাপটপ ওয়ান ড্রিম’ প্রকল্পের সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত হয়েছি। এটা তোমাদের ব্যক্তিগত স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসাবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, আমরা যখন পড়াশোনা করেছি, তখন পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি ছিল লাইব্রেরি। সেই লাইব্রেরির বই সংখ্যা তো থাকে সীমিত। কিন্তু একটি ল্যাপটপে সারা পৃথিবীর সব লাইব্রেরির সব বই পাওয়া যেতে পারে। আর সারা দুনিয়ার আপ-টু-ডেট সব তথ্য এতে সন্নিবেশিত আছে।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে ল্যাপটপ বিতরণের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি বিশেষ পেশায় নিয়োজিত স্বর্ণকিশোরীদের হাতেও আমরা ৭০টি ল্যাপটপ তুলে দিয়েছি। যাতে সমাজের কোনো অংশই বাদ না পড়ে।
অনুষ্ঠানে আইসিটি ডিভিশনের সচিব শ্যামসুন্দর শিকদার বলেন, দুই হাজার দরিদ্র মেধাবী শিশুর হাতে ল্যাপটপ তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আমরা নিলেও এর কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করা হয়েছে। এখন গুচ্ছ পদ্ধতিতে ল্যাপটপ বিতরণের কাজ আমরা করছি। যেন প্রযুক্তির অবারিত সুযোগের এ জায়গা থেকে কেউই বাদ না পড়ে।
‘হ্যালো’ নির্বাহী সম্পাদক মুজতবা হাকিম প্লেটো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫
একে/জেডএস