ঢাকা: নিরাপত্তা-রাজস্ব সুবিধায় সিম ও মোবাইল ফোনসেটের একক এবং স্বতন্ত্র নম্বর ব্যবস্থা থাকবে।
এটি এ সম্পর্কিত জাতীয় ডাটাবেজ ও এর ‘অটোলক সিস্টেম’ কোনো নম্বরের একাধিক ব্যবহার বন্ধ করবে বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।
শনিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘মোবাইল ডিভাইসেস অ্যান্ড ইটস রোল ইন ন্যাশনাল সিকিউরিটি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন।
টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের (টিআরএনবি) উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, কাস্টমস ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশনের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান, লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাইদ খান, ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম, র্যাবের কমিউনিকেশন উইং পরিচালক কমান্ডার শাহেদ করিম, র্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর, বিটিআরসির স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মোল্লা মো. জুবায়ের, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট মার্কেটিং ম্যানেজার ইফতেখার হোসাইন, ইনভিকো’র সিইও ফাওয়াদ গোরায়ের, গ্লোবাল সেলস পরিচালক জোসেফ ঈদ, বিক্রয়ডটকমের মার্কেটিং ডিরেক্টর মিশা আলী, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি রাশেদ মেহেদী ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম সজল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘আগামী বছরের এপ্রিল নাগাদ সিম রেজিস্ট্রেশনের কাজ সমাধা হয়ে যাবে। এরপরই শুরু হবে সেট নম্বর (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডিন্টিটি) রেজিস্ট্রেশনের কাজ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও রাজস্ব ক্ষতি ঠেকাতে এ ব্যাপক কর্মযজ্ঞে বাধ্য হয়েছি আমরা। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সব’চে বেশি ঠকছেন আমাদের মধ্যম আয়ের মানুষগুলো, এছাড়া স্মার্টফোন যারা ব্যবহার করছেন; তারাও ঠকছেন। সবাইকে নিরাপদে ও স্বস্তিতে রাখতে চাই বলেই এসব উদ্যোগ। ’
বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘আইএমইআই নম্বর ভেরিফিকেশনের সুযোগ থাকলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়। একটি আইএমইআই নম্বর কোথাও সেট হয়ে গেলে, সেটি বিটিআরসিতে যুক্ত করে দেওয়া ভালো সমাধান।
‘পর্যাপ্ত জনবল পেলে আইএমইআই নম্বরের তালিকা নিশ্চিত করা সম্ভব। ’
এ বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ ও চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন কাস্টমস ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন’র মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান।
তিনি বলেন, ‘মোবাইল ফোনের আমদানি অনেক বেড়েছে, বেড়েছে রাজস্বও। এটি ভালো লক্ষণ। কিন্তু আমাদের অটোলক সিস্টেম চালু করতে হবে। সিম ও আইএমইআই নম্বর অটোলক করা গেলে অপরাধ, চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব।
লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাইদ খান বলেন, ২০০৪ সালের এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, কালোবাজারে যেসব মোবাইল ডিভাইস বিক্রি হয়েছে, তাতে বিপুল অংকের কর থেকে বঞ্চিত হয়েছে বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র।
‘তাই মোবাইল আইএমইআই নম্বর বিশ্বে একক করতে হবে। একজনের নামে রেজিস্ট্রেশন হওয়া একটি ডিভাইস চুরি হলে, আইএমইআই নম্বরটি ব্লক করলে সেটটির কোন গুরুত্ব থাকবে না। আপাতত এটাই সবচে বড় সমাধান’- বলেন তিনি।
র্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, দেশের বাইরে যাওয়ার সময় একাধিক মোবাইল ফোন নেওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি প্রয়োজন। দামি ফোনগুলো চুরি হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে।
ডিএমপি যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, শাস্তিতে থাকা অপরাধীর ব্যবহারের নম্বরগুলো অন্যরাও অপরাধে ব্যবহার করছে। ভুয়া রেজিস্ট্রেশনেই বেশিরভাগ অপরাধ হচ্ছে। একটি তদন্তে এক আইএমইআই নম্বরে ১১০টি সিম ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছি আমরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
এসকেএস/এমএ