ঢাকা: কৃষকের জন্য কৃষিভিত্তিক সেবা নিয়ে এলো মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। কাস্টমাইজড ভয়েস কনসালট্যান্সি বা মোবাইলে পরামর্শ সেবার মাধ্যমে কৃষকদের এ সেবা দেবে দেশের সর্ববৃহৎ মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
'জিপি কৃষিসেবা' নামে এ সার্ভিসে ২৭৬৭৬ নম্বরে ডায়াল করে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন কৃষক।
সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সার্ভিসের উদ্বোধন করে গ্রামীণফোন। এসময় গ্রামীণফোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই সেবা পেতে প্রতি সপ্তাহে খরচ হবে মাত্র পাঁচ টাকা।
এছাড়াও গ্রাহক অ্যাগ্রো কল সেন্টারে কৃষি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন প্রতি মিনিট ৩ টাকায়। এ সেবার জন্য নিবন্ধিত গ্রাহক যেকোনো অপারেটর থেকে ১ পয়সা সেকেন্ডে কল করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের কৃষকদের তথ্যগত সহায়তা দেওয়াই গ্রামীণফোনের এ সেবার লক্ষ্য। এ সেবা ব্যবহার করে কৃষক শস্য উৎপাদন, শাক-সবজি ও মৎস্য চাষ, গবাদি পশু পালন এবং পুষ্টিসহ প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে তথ্য পাবেন।
জিপি কৃষিসেবায় কৃষক যে শস্য, মাছ, গবাদিপশু উৎপাদন করতে চান সে বিষয়ে তিনি যে অঞ্চলে অবস্থান করছেন সেই অঞ্চলের সঙ্গে মিল রেখে তথ্য দেওয়া হবে।
এই সেবা পেতে কৃষককে তার এলাকা ও পছন্দের শস্য, মাছ, গবাদি পশুর নাম দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। একজন কৃষক সর্বোচ্চ তিনটি টাইপ বেছে নিতে পারবেন।
গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা জানান, শস্য বর্ষপঞ্জি ও ঋতুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এতে তথ্য দেওয়া হবে। যদি খুলনা অঞ্চলের কোনো কৃষক যদি তার এলাকার আবহাওয়া অনুযায়ী তেলাপিয়া মাছ চাষের তথ্য জানতে চান তাহলে জিপি কৃষিসেবা শস্য বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী তথ্য দেবে। এ তথ্য হবে আইভিআর ও ভয়েস মেসেজ ভিত্তিক, যা তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাবেন। এ সেবা পেতে প্রতি সপ্তাহে খরচ হবে পাঁচ টাকা।
সেবার জন্য নিবন্ধন করা যেকোনো কৃষক লাল তীর বীজের প্যাকেট কিনে বিনামূল্যে ইউএসএসডি মেন্যুর মাধ্যমে বীজের প্যাকেটটি আসল কিনা কিংবা কেনা বীজের প্যাকেটে কোনো ভেজাল আছে কিনা সে বিষয়ে জানতে পারবেন।
কৃষিসেবার উদ্বোধনকালে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, গ্রামীণফোন সবসময় অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ ও সেবাদানের মাধ্যমে এ দেশের মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলতে চেষ্টা করে। সব ধরনের মানুষের জন্য আমরা আমাদের সেবাকে ক্রমাগত বিভিন্ন আঙ্গিকে বিস্তৃত করছি। ‘জিপি কৃষিসেবা’ আমাদের অভিনব সেবাগুলোরই সর্বশেষ সংস্করণ।
‘আমি বিশ্বাস করি, এটা কৃষকদের জীবনে নতুন সুবিধার মাধ্যমে তাদের জীবনকে সহজ করে তুলবে। কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে আমাদের কৃষিখাতের উৎপাদন বাড়াতে সহজলভ্য সব প্রযুক্তির ব্যবহার করা উচিত। ’
গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অফিসার (সিসিও) মাহমুদ হোসেনসহ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এই প্রকল্পের লক্ষ্য সম্পূর্ণ কৃষি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধিতে কৃষি বিশেষজ্ঞ, কৃষি সম্প্রসারণের সংগঠন ও কৃষিপণ্য বিক্রেতাদের একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।
কৃষিসেবার পরীক্ষামূলক পর্যায়েই প্রায় ১২ হাজার কৃষক সেবা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন বলে জানানো হয়।
প্রযুক্তির ব্যবহার ও তথ্যগত সেবাদানের মাধ্যমে কৃষিনির্ভর ১৫ কোটি মানুষের প্রয়োজন মেটাতে গ্রামীণফোনের ক্রমাগত প্রচেষ্টারই একটি অংশ এ প্রকল্প।
বিশ্বজুড়ে মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান জিএসএমএ উন্নয়নশীল দেশগুলোর থেকে দরপত্রের প্রস্তাবনা আহ্বান করে এবং বাংলাদেশে এটা জিতে নেয় গ্রামীণফোন। এছাড়াও তারা কন্টেন্ট ডেভলপমেন্ট এবং বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা নিয়েও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়।
জিপি কৃষিসেবায় কন্টেন্ট পার্টনার হিসেবে আছে উইনমিয়াকি লিমিটেড।
এছাড়াও কৃষি বিষয়ক অন্যান্য সংস্থা ও অংশীদারেরা এ প্রকল্পে কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫/আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এএ