ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

এবার যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি করেছেন সেই মুন্না

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এবার যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি করেছেন সেই মুন্না ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: জ্বালানি সাশ্রয়ী গ্যালাক্সি বাইকের পর যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন (টারবো জেট ইঞ্জিন) তৈরি করলেন চট্টগ্রামের সেই খুদে বিজ্ঞানী ও বিস্ময় বালক মনোয়ারুল ইসলাম মুন্না।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশে তিনি প্রথম এ ইঞ্জিন তৈরি করেছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মুন্না।



মুন্না বলেন, ‘২০০৩ সালে বিমানের ইঞ্জিন তৈরির কৌতুহল জাগে আমার। অল্প অল্প করে গবেষণা করে যাচ্ছি। কিন্তু এতো জটিল বলে সাহস পাইনি’।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি একটি বাহিনীর অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশ খুব শিগগিরই যুদ্ধবিমান তৈরি করবে’।

‘সেই থেকে সাহস পেলাম। পরিবারের সদস্যদের উৎসাহে ৪ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ২০ নভেম্বর এ ইঞ্জিন আবিস্কার করতে সক্ষম হই’- বলেন মুন্না।

ইঞ্জিনটি ১৮-২০ বার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। টারবো জেট ইঞ্জিনটি তৈরি করতে নিজের প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয় বলেও জানান মুন্না।

ইঞ্জিন সম্পর্কে মুন্না বলেন, যুদ্ধবিমান ছাড়াও কিছু কিছু উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যাত্রীবাহী হেলিকপ্টারেও এ ইঞ্জিন ব্যবহার করা যাবে।

ইঞ্জিনে পিস্টন ও ক্রেংশ্যেপ্ট নেই। ইঞ্জিনটি মূলত ইমপ্লোরারের মাধ্যমে বাতাসকে কমপ্রেসড করে কমবাসন চেম্বারে জ্বালানি ও বাতাসের মিশ্রণ ঘটিয়ে উচ্চ ক্ষমতায় বিস্ফোরণ ঘটায়। এ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মূলত ইঞ্জিনটি চলে। এর ক্ষমতা প্রায় ১ দশমিক ৪ কেজি পিএসআই (পার স্কয়ার ইঞ্চি)। ইঞ্জিনের সামনের দিকে উচ্চ আরপিএম (রেগুলেশান পার মিনিট) সম্পন্ন একটি মোটর লাগানো আছে। যা অন্যান্য ইঞ্জিনের মতো সেলের কাজ করে। নির্দিষ্ট একটি আরপিএমে মোটরের মাধ্যমে ঘোরানো হলে জ্বালানি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইঞ্জিনটি চালু হয়।

মুন্না বলেন, ‘মূল ইঞ্জিনটি তৈরি ব্যয়বহুল। অর্থ সংকটের কারণে ১ দশমিক ৮ ফুট লম্বা ও ৬ ইঞ্চি উচ্চতা সম্পন্ন ইঞ্জিনটি তৈরি করেছি’।

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জ্বালানি সাশ্রয়ী গ্যালাক্সি বাইক (মোটরসাইকেল) আবিষ্কার করি। বাংলানিউজে ‘গ্যালাক্সি বাইক’ বাজারজাতে প্রত্যাশী বিজ্ঞানী মুন্না, শিরোনামে নিউজ প্রকাশের পর আরো বেশি সাড়া পাই। এ থেকেও এ ইঞ্জিন আবিষ্কারে প্রেরণা পাই’।

সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে আবিষ্কৃত যন্ত্রগুলো বাজারজাত ও গবেষণা আরো বেশি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান মুন্না।

২০১০ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় গুদামে পানি উঠলে মালিককে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল কলে জানানোর যন্ত্র আবিষ্কার করে বিস্ময় বালকের পরিচিতি পান মুন্না।

এরপর পানির ট্যাঙ্কি অটো ভর্তি ও খালি করার যন্ত্র, পানির মধ্যে গাড়ি চালানোর যন্ত্র, ঘরের তাপমাত্রা মেপে অটো অ্যাডজাস্টিং ফ্যান চালানো ও বন্ধ করার যন্ত্র, মসলা মিলিং করার যন্ত্র, জ্বালানি ছাড়া ইঞ্জিন তৈরির যন্ত্র, গমের খোসা ছাড়িয়ে ময়দা মিলিং করার যন্ত্র, বিমান তৈরির জন্য রেডিয়াল ইঞ্জিন ও জেট ইঞ্জিন ডিজাইন (ব্যয়বহুল বলে বন্ধ), টারবাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরির যন্ত্র, পুকুরে অক্সিজেন তৈরির যন্ত্র, বাইসাইকেলকে মোটরসাইকেলে রূপান্তর, পাওয়ার ও ফুয়েল সেভিং ‘গ্যালাক্সি বাইক’ (মোটরসাইকেল), সড়কে নাশকতা মনিটরিং করতে চারটি প্রফেলার বিশিষ্ট ড্রোন আবিষ্কার করেন তিনি। যার ফ্লাইং টাইম ৪-৫ মিনিট। এছাড়া পেট্রোল বোমা থেকে গাড়িকে রক্ষার জন্য গ্লাস প্রটেক্টর তৈরি করেন।

মুন্না চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পেশকারপাড়ার তাজুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে মুন্না চিটাগাং টেকনিক্যাল কলেজে (সিটিসি) অটোমোবাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছেন।

** ‘গ্যালাক্সি বাইক’ বাজারজাতে প্রত্যাশী বিজ্ঞানী মুন্না

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
আরইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।