ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

‘ডিজিটাল আইনের কিছু ধারায় সব নাগরিকই ঝুঁকিতে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৮
‘ডিজিটাল আইনের কিছু ধারায় সব নাগরিকই ঝুঁকিতে’ ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা

ঢাকা: কেবল গণমাধ্যম বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠী নয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারার কারণে দেশের সব নাগরিকেরই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।

শনিবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা এ মত প্রকাশ করেন।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৬২টি ধারার মধ্যে কিছু ধারা নিয়ে আমরা প্রথম থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।

এটি নিয়ে আমরা তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বসেছি, কথা বলেছি। আমাদের আরও একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। দুঃখের বিষয় তার আগেই রাষ্ট্রপতি আইনে স্বাক্ষর করেন। এখন এর প্রয়োগ হচ্ছে, মামলা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি সাইবার নৈরাজ্য বিষয়ে আইনের প্রয়োজন আছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা দিয়েছেন পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় এলে তারা এ সংশোধনীটি করবেন। সরকার ডিজিটালাইজেশনের ক্রেডিট নেবে, আবার ডিজিটাল ধারাকে চেপে ধরবে, এটা হতে পারে না। আশা করি চলতি অধিবেশনেই এটার সংশোধন হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ হয়েছে। ওই ধারার ৪টি ধারা ডিজিটাল আইনে নেওয়া হয়েছে। এটারও অপপ্রয়োগ হবে। আমি নিজেই ফেসবুকে ‘ফেক পোস্টের’ শিকার। মামলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল আইনে কিছু অসংগতিপূর্ণ শব্দ আছে, যার শিকার যে কেউ হতে পারে, যেগুলো অস্পষ্ট। এ আইনের মাধ্যমে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা চাইলে আপনাকে অনেক কিছু করতে পারে।

বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ডিজিটাল আইন কোনো বাইবেল নয়। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা হয় এমন ধারা চিহ্নিত করুন, সেগুলো আলোচনাসাপেক্ষ সংশোধন করা হবে।

তিনি বলেন, এ আইন করা হয়েছে জাতীয় ও দেশের স্বার্থে, ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়। অনেক সময় হ্যাকিংয়ের কারণে বিব্রত হতে হয়, যা বড় অন্যায়। এটা রোধ করা দরকার।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, এ আইনের মাধ্যমে যে কাউকে হয়রানি করা সম্ভব। আমার মনে হয় দুর্নীতি ঢাকতে, পাচার করা টাকার বিষয় ঢাকতে এ আইন করা হয়েছে। কেউ কোনো কথা বললেই তাকে আটক করা হবে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব শাবান মাহমুদ বলেন, মুক্তমত, অনুসন্ধান ও স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা হয় এমন ধারাগুলো চিহ্নিত করেছি। পাস হওয়ার আগেই আমরা তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলাম। আইনমন্ত্রী সংশোধনের কথা বললেও তিনি আমাদের কথা রাখেননি। আমাদের আশা আছে গণতান্ত্রিক সরকার, ডিজিটাল আইনের কিছু ধারা সংশোধন করে সরকার গণতান্ত্রিকতা বজায় রাখবেন।

ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সাঈদ আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হাসান জাবেদের সঞ্চালনায়, সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বার কাউন্সিলের সদস্য মো.মোখলেসুর রহমান বাদল, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৮
ইএআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।