জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০২১ সালের আগেই ইউনিয়ন পর্যন্ত যে সাড়ে তিন হাজার ভূমি অফিস রয়েছে সবগুলোতেই হাইস্পিড ফাইবার অপটিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় নিয়ে আসবো। ফলে এখন উপজেলা পর্যন্ত ইমিউটেশনসহ অন্যান্য কাজগুলো হচ্ছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-নামজারি সক্ষমতা মূল্যায়ন গবেষণালব্ধ ফলাফল বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা জানান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি সাইফুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ক্যান্ডিডেট মার্টিন ম্যাটসন, ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ইমরান মতিন প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে জনগণের হয়রানি, ভিজিটর ও সময় সেভ হচ্ছে। এতে প্রায় ৭ কর্ম ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হচ্ছে। দ্রততম সময়ে আমরা সারাদেশে এই সিস্টেমের উপযুক্ত করে দিতে পারছি।
তবে, ভূমি ডিজিটালাইজেশনের জন্য প্রথমে বিদ্যুতের দরকার। এরপরই হচ্ছে ইন্টারনেট সংযোগ। ইন্টারনেট সংযোগ না দিতে পারলে ডিজিটালাইজেশন সম্ভব নয়। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ভূমিখাতকে পুরোপরি ডিজিটালাইজেশনের সব ধরনের সফটওয়্যার সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, ই নামজারির জন্য ১০ লাখ আবেদনের মধ্যে সাড়ে ৬ লাখ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। প্রায় ৩০ লাখ মামলা কোর্টে পেন্ডিং রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই হচ্ছে ভূমি সংক্রান্ত মামলা। ভূমি খাতটা পুরোপুরি ডিজিলাইজেশন হয়ে গেলে মামলা জটের অর্ধেকটায় কমবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের জন্য আমরা একটা ট্রেনিং প্রোগ্রাম থ্রো করবো। আমরা এখন ই-গভর্নেন্স থেকে এম- ই-গভর্নেন্সে রূপান্তরিত হচ্ছি। আমরা এখন মোবাইল ফার্স্ট এই একটা এ্যাপ্রোচে এগুচ্ছি। যতগুলো সার্ভিস রয়েছে এগুলো ওয়েব সাইটের মধ্যমে হচ্ছে। এটা এখন আমরা ডিজাইন করছি, যেনো মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে এসব সেবা দেওয়া যায়। এটা আমরা আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে করতে চায়।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ভূমি অফিস ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় সেম ফেইজে থাকতে পারেব সেজন্য এটুআইয়ের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যায়। পুরো সিস্টেমটা ডিজিটালাইজেশন হয়ে গেলে কে কোন মান্ত্রণালয়ে সেটা দেখার বিষয় থাকবে না। অনলাইনে কাজটা শেষ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে হয়রানি বা কোনো সমস্যা থাকবে না।
ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ভূমি আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয় বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইসিটিখাতে গত দশ বছরে প্রায় ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছি। আগমী ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ১০ লাখ কর্মী এ খাতে তৈরি করতে পারবো। আজ থেকে ১০ বছর আগে ৫৬ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো। এখন সেটা সাড়ে ৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
গবেষণা ফলাফলে দেখানো হয়, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সেবা দেওয়া হার ই- নামজারির মাধ্যমে নামজারি সেবা দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারিদের ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বাড়বে এবং বর্তমান ২৮ দিনের ক্ষেত্রে নামজারি সেবা দেওয়ার হার ২০ শতাংশ সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বেড়েছে। প্রান্তিক অঞ্চলে অনেক সময় সেবা গ্রহীতারা ভূমি অফিসে গিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা নেবেন।
গত ১৮ এপ্রিল থেকে জুন ১৯ পর্যন্ত সময়ে প্রদত্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নামজারি সেবা ও ই নামজারি সেবা দেওয়ার বিষয়ে ১৫৫ উপজেলায় প্রদত্ত নামজারি দেওয়ার বিষয়ে গবেষণা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২১০৯
জিসিজি/এএটি