ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

এক নজরে এপিকটা জয় করা ৮ প্রকল্প

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৯
এক নজরে এপিকটা জয় করা ৮ প্রকল্প

হা লং, ভিয়েতনাম থেকে: ভিয়েতনামের হা লং শহরে শেষ হলো এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যাওয়ার্ড (এপিকটা) ২০১৯-এর ১৯তম আসর। টানা চতুর্থবারের মতোই অংশ নিয়ে এবারের আসরে নিজেদের ইতিহাসে সেরা সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

তিনটি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন এবং পাঁচটি ক্যাটাগরিতে মেরিট স্বীকৃতি নিয়ে এবারই এপিকটা থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক পুরস্কার অর্জন করলো বাংলাদেশ।  

চ্যাম্পিয়ন পদক

বন্ডস্টাইন এর পিজি ট্র্যাকার
ইন্টারনেট অন থিংস (আইওটি) নিয়ে কাজ করা বন্ডস্টাইনের প্রকল্প ছিল পিজি ট্র্যাকার।

টেকনোলজি (আইওটি) ক্যাটাগরিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পিজি ট্র্যাকার। পোর্টেবল জেনারেটরকে (পিজি) আইওটি প্রযুক্তির মাধ্যমে মনিটরিং এবং জেনারেটরের তথ্য বিশ্লেষণ করে অধিক কার্যকর এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী উপায়ে সেগুলোর ব্যবহারে ভূমিকা রাখবে বন্ডস্টাইনের এই উদ্ভাবন। জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির কিছু সফলতার চিত্র গলিয়েছে বিচারকদের মন।  

সূর্যমুখী লিমিটেডের সূর্যমুখী প্রাণী সেবা
সূর্যমুখী লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার মধ্যে একটি হচ্ছে সূর্যমুখী প্রাণী সেবা। দেশে প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর জন্য ইনস্যুরেন্স বা বীমা ব্যবস্থা চালু করেছে তারা। এছাড়াও গবাদি প্রাণীর জাত উন্নয়ন, সফল প্রজনন, তথ্য সংরক্ষণ, গবাদি প্রাণী পালন ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান বিষয়েও কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। এবারের আসরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল (জেনারেল) বিচারকদের মন জয়ে দারুণভাবে সফল হয়েছে ভিন্নরকম এই উদ্যোগ।  

এক শপ
অনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর মাত্র এক মাসের মাথায় এপিকটা চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার মতো দারুণ এক সফলতা পেলো বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের প্রকল্প এক শপ। একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)-এর বাস্তবায়নে প্রকল্পটি কনজিউমার মার্কেটপ্লেস অ্যান্ড রিটেইল ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। দেশের ই-কমার্স গুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ই-কমার্স সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সরকারের এই প্রকল্প।  

মেরিট সনদ
সিগমাইন্ডের ইনটেলিজেন্ট কম্পিউটার ভিশন টেকনোলজি ফর ভিডিও অ্যানালিটিক্স কনজিউমার (মার্কেটপ্লেস) ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়ে মেরিট পজিশন অর্জন করে সিগমাইন্ডের প্রকল্প ইনটেলিজেন্ট কম্পিউটার ভিশন টেকনোলজি ফর ভিডিও অ্যানালিটিক্স। ইন্টারনেট অন থিংস এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সহায়তায় মূলত চলমান চিত্র অর্থাৎ ভিডিও থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এই সিস্টেম। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ভিডিও ক্যামেরার সাহায্যে চলন্ত যানবাহনের নম্বর প্লেটের ছবি থেকে যানবাহনের নম্বর সংগ্রহ এবং সেটির গতিবিধি ও অবস্থান দেখা যাবে এই প্ল্যাটফর্মে। অনেকটা ইমেজ থেকে টেক্সট রিডিংয়ের একটি ব্যাপার। এর উদ্ভাবকদের দাবি, এর মাধ্যমে ট্রাফিক আইন অমান্য করা যানবাহনকে ক্যামেরার ফুটেজ থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিহ্নিত করা যাবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রথম ধাপ হবে এটি।

সিএমইডি
ইনক্লুষন (হেলথ এন্ড ওয়েল বিয়িং) ক্যাটাগরিতে মেরিট পজিশন অর্জন করেছেন সিএমইডি ডিজিটাল প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস মডেল। ইন্টারনেট অন থিংস এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি নির্ভর এই স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার মূল ঔষধ ক্লাউড সার্ভার। প্রতিরোধকারী বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সেবার মনিটরিং স্মার্ট এবং ডিজিটাল উপায়ে করে থাকে এই প্ল্যাটফর্ম।

সিমেড এর স্মার্ট মেডিকেল ডিভাইস সমূহ ব্যাবহার করে মানবদেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ সমূহের পরিমাপ প্রদর্শন করে ও প্রাপ্ত তথ্যসমূহ সুরক্ষিত ক্লাউড সার্ভারে সংরক্ষণ করে থাকে। ব্যবহারকারীরা তাদের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে তাৎক্ষনিক সংকেত জানতে পারবেন অত্যাধুনিক এই সিস্টেমের মাধ্যমে। সিমেডের রেকর্ডকৃত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যাবলি ব্যবহারের মাধ্যমে ডাক্তারগণ রোগ নির্ণয়ের সময় কমিয়ে এনে উন্নত চিকিৎসা প্রদানে সমর্থ হবেন বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।  

প্রাইড কাট
২০১৩ সালে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সদস্যপদ লাভ করা এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত তাদের কর্পোরেট গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের আইটি সেবা ও পণ্য দিয়ে থাকে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অটোমেশনে নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সেবাও দিয়ে থাকে প্রাইড সিস আইটি লিমিটেড। প্রাইড কাট নামে তাদের প্রকল্প ইন্ডাস্ট্রিয়াল (জেনারেল) ক্যাটাগরিতে মেরিট সনদের জন্য নির্বাচিত হয় প্রতিষ্ঠানটি।  

৩৩৩ এবং দূতাবাস
পাবলিক সেক্টর (গভর্নমেন্ট এন্ড সিটিজেন সার্ভিস) ক্যাটাগরিতে মেরিট পজিশনে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশের দুইটি প্রকল্প। এগুলো হলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ এ প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচালিত জাতীয় তথ্য কেন্দ্র ৩৩৩ এবং দূতাবাস অ্যাপ। নাগরিকদের বিভিন্ন বিষয়ে তাৎক্ষণিক তথ্য সহায়তা দিতে কাজ করছে জাতীয় তথ্য কেন্দ্র ৩৩৩। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সেবাও নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে ৩৩৩।

অন্যদিকে দেশের বাইরে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সেবা ডিজিটাল মাধ্যমেই পৌঁছে দিতে কাজ করছে দূতাবাস অ্যাপ। চলতি বছরের জুলাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা দূতাবাসে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪ ধরনের সেবা পাওয়া যায়।

এদিকে ভিয়েতনামের মাটিতে দেশের এমন সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ।  

বাংলানিউজের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, এই অর্জন দেশের জন্য সত্যি আনন্দের এবং গৌরবের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত এক দশকে দেশের আইটি খাতের যে উন্নয়ন হয়েছে তারই উদাহরণ এই অর্জন। বিজয়ীদের প্রতি আমার শুভ কামনা রইল এবং যারা পুরস্কার পায়নি তারাও দেশ ও সমাজের জন্য নিজেদের প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।  

এদিকে বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারী সবগুলো দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজ ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে বার্তা দিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।  

.বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৫, নভেম্বর ২৩, ২০১৯
এসএইচএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।