দেশের অন্যতম বৃহৎ কমপিউটার মার্কেট মাল্টিপ্ল্যান সিটি সেন্টারে ৮ দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার২০১১’ শুরু হয়েছে। এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এটি এ বিপণন কেন্দ্রের চতুর্থ উদ্যোগ। এবারের প্রতিপাদ্য ‘গো গ্রিন উইথ আইসিটি‘। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী চলবে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
ড. হাছান মাহমুদ জানান, বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় রোধে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে জনসচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। মানুষের যত্রতত্র আচরণে পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে পৃথিবী বসবাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। হয়ে উঠছে বিপন্ন। এ অবস্থার উন্নয়নে আইসিটিকে আরও সক্রিয় করা সম্ভব।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক সাংসদ ও বৃহত্তর এলিফ্যান্ট রোড দোকান মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টু। আইসিটি খাতের বিকাশের স্বার্থে বয়োজ্যেষ্ঠদের চেয়ে তরুণ প্রজন্মকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সাংসদ এবং ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আইসিটি দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা সম্পর্কে বলেন, গত ৪০ বছরে লক্ষ্য ঠিক না থাকায় দেশের সঠিক উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। এখনকার ডিজিটাল বাংলাদেশ।
গত তিন বছরে শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে আইসিটির কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ২০১৩ সালের মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে কমপিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে। অচিরেই তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে শিক্ষিত একটি নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যৎ জাতি গঠনে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি এলিফ্যান্ট রোডকে লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটের সঙ্গে তুলনা করেন এবং এ এলাকার কমপিউটার ব্যবসায়ীদের দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিপণ্য দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি মোস্তফা জব্বার জানান, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকরী নীতি গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব এসএ কাদের কিরণ এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের হেড অব নিউজ চৌধুরী আফতাবুল ইসলাম, মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার, কোষাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হাজারী, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান।
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রদর্শনীর আহ্বায়ক ও মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তৌফিক এহেসান। এ ছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটিসেল চিফ কাস্টমার কেয়ার অফিসার ও চিফ প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অফিসার মাহবুব হোসেনসহ প্রদর্শনীর আয়োজক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি তৌফিক এহেসান বলেন, পুরো আট দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে দেশের ৪৫০ থেকে ৫০০টি আইটি প্রতিষ্ঠান। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে মার্কেটের তৃতীয় থেকে ১০ম তলা পর্যন্ত ৯৬ হাজার বর্গফুট এলাকাজুড়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে বিশ্বের সুপরিচিত আইসিটি ব্র্যান্ড এ প্রদর্শনীর পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
এ প্রদর্শনীর প্ল্যাটিনাম স্পন্সর সিটিসেল। কোস্পন্সরের তালিকায় আছে আভিরা, অ্যাসার, এসপি সিলিকন পাওয়ার, ম্যাকগ্রীন, ফুজিটসু, হাইটেক এবং ভেরিকো। এ ছাড়াও প্রদর্শনীর ইলেকট্রনিক মিডিয়া সহযোগী হিসেবে আছে এটিএন নিউজ, রেডিও সহযোগী রেডিও ফূর্তি এবং প্রিন্ট মিডিয়া সহযোগী কালের কন্ঠ।
ওয়েব সহযোগী ই-সফট। বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পণ্যগুলো সুলভে এ প্রদর্শনীতে পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও প্রদর্শনী উপলক্ষে সিটিসেল জুম আলট্রা দিচ্ছে বিশেষ প্যাকেজ। এবারের ডিজিটাল আইসিটি প্রদর্শনীর বিশেষ আয়োজন হিসেবে থাকছে আইসিটি বিষয়ক সেমিনার, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রক্তদান কর্মসূচি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের জন্য আছে গেমিং জোন।
এ ছাড়াও প্রদর্শনী চলাকালীন প্রতি ৫ ঘণ্টা পর পর প্রবেশ টিকেটে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। প্রবেশমূল্য ১০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ পাবে। আগ্রহীরা (www.digitalictfair.com) এ সাইটে আরও বিস্তারিত তথ্য পাবেন।
বাংলাদেশ সময় ১৬৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১১