ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে দেশে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি (ফাইভজি) সেবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে রোববার (১২ ডিসেম্বর)।
পঞ্চম ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় রোববার রেডিসন ব্লুতে সন্ধ্যা ৭টায় এক অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এই সেবার উদ্বোধন করবেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে বিশ্বের ৮টি দেশ ফাইভজি চালু করে। মালয়েশিয়া আগামী বছরের মার্চে চালু করবে। আমাদের জন্য সৌভাগ্য যে আমরা নবম দেশ হিসেবে এই প্রযুক্তি চালু করছি।
প্রাথমিকভাবে টেলিটকের মাধ্যমে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি-৩২, বাংলাদেশ সচিবালয়, মানিক মিয়া এভিনিউ এবং ঢাকার বাইরে সাভার ও টুঙ্গিপাড়ায় এই সেবা চালু হবে।
টেলিযোযোগ মন্ত্রী বলেন, উদ্বোধনের এই মাহেন্দ্রক্ষণটি ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ঘোষিত দূরদৃষ্টি কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করছে।
ডিজিটাল বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় বিশ্বে নতুন সভ্যতার রূপান্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবোটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন, আইওটি, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাদি ও অন্যান্য প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপরিহার্য এক প্রযুক্তির নাম। এই প্রযুক্তি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বংলা ও শেখ হাসিনার উন্নত, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা সোসাইটি ৫ দশমিকের জন্য অপরিহার্য।
২০১৮ সালে বার্সিলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে ফাইভ-জি ধারণাটি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের সরাসরি উপস্থিতিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় এই প্রযুক্তির প্রথম পরীক্ষা সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ফাইভ-জি চালু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় টেলিটক সীমিত পরিসরে ফাইভ-জি চালু করতে যাচ্ছে।
ফাইভ-জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবোটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন, আইওটি প্রযুক্তির আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন, ইত্যাদি প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট হোম, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা নিতে পারবে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত গুণগত মানের ভয়েস কল ও ফোরজি থেকে বহুগুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগীর রোবট সার্জারি করা যাবে। ড্রাইভারবিহীন গাড়ি চালানো যাবে, স্মার্ট ফ্যাক্টরি স্থাপনের মাধ্যমে অটোনোমাস উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করে উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
প্রাথমিকভাবে ঢাকার ছয়টি স্থানে ফাইভ-জি কাভারেজের আওতায় আনা হলেও পরে টেলিটক ঢাকা শহরের ২শ'টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এ প্রযুক্তি সেবা চালু করবে। আগামী বছর মার্চে বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ নিলামে দেওয়ার পর বেসরকারি তিনটি মোবাইল অপারেটর এই প্রযুক্তি চালু করবে। ২০২২ সালের পর টেলিটক ও বিটিসিএলের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে স্পেশাল ইকোনোমিক জোনগুলোতে এই সেবা চালু করার প্রস্তুতির কাজ চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহাব উদ্দিন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১/আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এএটি