ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জার্মানিতে তৈরি হচ্ছে পাউরুটির বিয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
জার্মানিতে তৈরি হচ্ছে পাউরুটির বিয়ার

বাসি রুটি দিয়ে বিয়ার! আদৌ সম্ভব? বার্লিনের এক বিয়ার প্রস্তুতকারক সেই প্রক্রিয়া জানেন। মিশায়েল লেম্বকে এমন বেকিং পণ্য দিয়ে অ্যালকোহল-মুক্ত বিয়ার তৈরি করেন, যা সাধারণত ফেলে দেওয়া হতো।

এমন ভাবনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, খাবারের অপচয় ও টেকসই প্রক্রিয়া আজ বিশাল চর্চার বিষয় হয়ে ওঠায় আমাদের মাথায় ব্রেড বিয়ারের আইডিয়া আসে। সে কারণে আমরা এই বিয়ারের উপাদান হিসেবে পাউরুটি ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। এভাবে বিষয়টির প্রতিও মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম।
 
প্রায় ২৭ হাজার বোতল ব্রেড বিয়ার তৈরি করতে প্রায় ৭৫ কিলোগ্রাম বাসি পাউরুটির প্রয়োজন হয়। বার্লিনের মাস্টার বেকার টেও ক্যোস্টার নিখুঁতভাবে উৎপাদনের পরিকল্পনা করলেও কিছু অবশিষ্ট থেকেই যায়। তবে সব ধরনের রুটি বিয়ার তৈরির জন্য উপযুক্ত নয়।

মাস্টার বেকার হিসেবে টেও ক্যোস্টার বলেন, সেই পাউরুটি এমন হতে হবে, যার মধ্যে শস্য ছাড়া অন্য কোনো উপাদান থাকবে না৷ অর্থাৎ কিশমিশ, বাদাম, তেলের বীজ থাকলে চলবে না। কারণ গাঁজন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটবে এবং এমন সুস্বাদু বিয়ার তৈরি হবে না।

পাউরুটি দিয়ে পানীয় তৈরি মোটেই নতুন কোনো আবিষ্কার নয়। কয়েকশ বছর ধরে সেই ধারা চলছে। যেমন মিশরের বোজা বা মধ্যযুগে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের কোয়াস। বিগত কয়েক বছরে ব্রেড বিয়ারের পুনর্জন্ম ঘটেছে৷ 

ফলে মিশায়েল লেম্বকের মতো ক্রাফট বিয়ার ব্রিউমাস্টারের মাথায় নতুন আইডিয়া আসছে। তিনি প্রথমে বাসি পাউরুটির ছোট ছোট টুকরো করছেন এবং ব্রিউয়িং প্রক্রিয়ার শুরুতেই সেই মণ্ড যোগ করছেন।  

জটিল প্রক্রিয়ার ধাপগুলো বর্ণনা করে মিশায়েল বলেন, এই ম্যাশ টুনে আমরা পানি ও মল্ট গ্রিস্ট মেশাই। এনজাইম সক্রিয় করে তোলা হয়, যা তারপর মাড় থেকে শর্করা তৈরি করে। সেই প্রক্রিয়ার জন্য প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। এই বিয়ারের বিশেষত্ব হলো এই যে, আমরা মণ্ডের মধ্যে পাঁচ শতাংশ পাউরুটি দিই। তারপর আমরা সেই মণ্ড পাম্প করে লটার টানে ঢুকিয়ে দিই এখানে কঠিন ও তরল আলাদা করা হয়৷ সেই তরলই তথাকথিত বিয়ার ওয়ার্ট, যা আমরা পরে ফোটাই।

তারপর শুধু ইস্ট যোগ করা হয়। ইস্ট সাধারণত শর্করাকে অ্যালকোহলে রূপান্তরিত করে। তবে ব্রেড বিয়ারের ক্ষেত্রে সেটা করা হয় না। মিশায়েল লেম্বকে বলেন, এই অ্যালকোহলমুক্ত ব্রেড বিয়ারের জন্য আমরা বিশেষ ধরনের ইস্ট ব্যবহার করি, যা শুধু চিনি গাঁজন করতে পারে। উদ্বৃত্ত চিনি বিয়ারেই থেকে যায়। ফলে বেশি অ্যালকোহল সৃষ্টি হয় না।

জার্মানিতে কোনো পানীয়র মধ্যে অ্যালকোহলের মাত্রা শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত থাকলে সেটিকে অ্যালকোহল-ফ্রি হিসেবে গণ্য করা হয়। ব্রিউয়িং প্রক্রিয়ার পর বিয়ার শুধু বোতলে ভরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। সেই ব্রেড বিয়ারের স্বাদ গ্রাহকদের ভালোই লাগে।

বর্জ্য এড়ানো ও কাঁচামাল সাশ্রয়ই হলো মূলমন্ত্র। ব্রেড বিয়ার দেখিয়ে দিচ্ছে, যে স্বাদের ক্ষেত্রে কোনো আপস না করেও বিয়ার ব্রিউয়িং প্রক্রিয়াও টেকসইভাবে সাজানো সম্ভব।

সূত্র: ডয়চে ভেলে 

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।