হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর দখলদার ইসরায়েলিরা গাজার সব ধরনের সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় উপত্যকাটিতে মানবিক বিপর্যয় হচ্ছে ব্যাপক।
এ অবস্থায় গাজার সরকারি গণমাধ্যম থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অঞ্চলটিতে পুরোপুরিভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এর কারণ, পর্যাপ্ত জ্বালানি না পাওয়া।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকা একটি আসন্ন মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। জ্বালানি হ্রাসের কারণে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পুরো উপত্যকা সম্পূর্ণ অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার হুমকির মুখে রয়েছে। এ অবস্থায় সব ধরনের মৌলিক পরিষেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। কেননা, এসবের সব কিছুই বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে। রাফাহ থেকে জ্বালানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে জেনারেটর দিয়ে আংশিকভাবে বিদ্যুৎ সেবা দেওয়াও অসম্ভব।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমান বিপর্যয়কর পরিস্থিতি গাজা উপত্যকার সমস্ত বাসিন্দাদের জন্য একটি মানবিক সঙ্কট তৈরি করে। দখলদারদের (ইসরায়েল) অব্যাহত আগ্রাসন ও শত শত টন বিস্ফোরকের মাধ্যমে আমাদের আবাসিক এলাকাগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে। বোমা হামলায় আমাদের নাগরিকদের বাড়িঘরে তাদের মাথার ওপর ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এটিকে আধুনিক ইতিহাসে অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ‘যৌথ শাস্তির নোংরা অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবতার বিরুদ্ধে এই অপরাধ ও বহুবিধ গণহত্যা বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। গাজা উপত্যকাকে জীবনের সমস্ত উপায় সরবরাহ করার প্রয়োজন; এ বিষয়টি যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভুলে না যায়। দখলদারদের হত্যাযজ্ঞের হাতিয়ারের কাছে গাজাবাসী জিম্মি।
মঙ্গলবার গাজার মানুষের মানবেতর অবস্থা সম্পর্কে জানায় জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ৮৭ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা বাস্ত্যুচ্যুত হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জাতিসংঘের ৮৩টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত এক লাখ ৩৭ হাজার বাসিন্দা। গাজায় বিতরণ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এই সপ্তাহে জাতিসংঘের রেশন পাননি।
হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে ৯৭৪ জন। ইসরায়েলে মারা গেছে ১২০৮ জনেও বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
এমজে