ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

১০ বছর পর ছেলেকে দেখলেন সু চি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১০
১০ বছর পর ছেলেকে দেখলেন সু চি

ইয়াঙ্গুন: দশ বছর পর মা-ছেলের দেখা। ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে আবেগঘণ পরিবেশে কুশল বিনিময় করেন তারা।

চারপাশে উপচে পড়া মানুষ ঢল। সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেছেন মা-ছেলেকে। অনুভূতি জানাতে গিয়ে মা বললে, ‘আমি খুবই আনন্দিত। ’

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির ছেলে কিম অ্যারিস (৩৩) মঙ্গলবার সকালে ব্যাংকক থেকে ইয়াঙ্গুন বিমান বন্দরে পৌঁছান। বিমান বন্দরে ছেলেকে অভ্যর্থনা জানান সু চি।  

মা ছেলের সাাতের প্রত্যদর্শী বার্তাসংস্থা এএফপি’র এক সাংবাদিককে সু চি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি এবং আনন্দিত। ’

হাসিমুখে মায়ের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর পরই অ্যারিস তার হাতে আঁকা সু চি’র দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির প্রতীকের ট্যাটু দেখান। প্রত্যদর্শী ওই সাংবাদিক সূত্রে এই তথ্য জানাগেছে।

দশ দিন আগে গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্তি পান সু চি । মায়ের মুক্তির খবরে ব্রিটেনের বাসিন্দা অ্যারিস ব্যাংকক আসেন। কিন্তু সেনা শাসিত দেশটির ভিসা না পাওয়ায় তিনি দীর্ঘসময় ব্যাংককে অপো করতে বাধ্য হন। পরে সেখান থেকে মিয়ানমারে আসতে ভিসার জন্য আবেদন করেন। সোমবার দেশটির সামরিক জান্তা তার ভিসা মঞ্জুর করে।

মুক্তির পর  থেকে সু চি তার সঙ্গে দেখা করার জন্য অপো করছিলেন।
 
মিয়ানমারের জান্তা সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সু চিকে গত ২১ বছরের মধ্যে ১৫ বছরেরও বেশি সময় গৃহবন্দী করে রাখে।

গৃহবন্দী থাকাবস্থায় তাকে কখনোই টেলিফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি জান্তা সরকার। একইসঙ্গে বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে সীমিত যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া হয় তাকে।

এ কারণে মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক ও গুপ্ত হত্যার শিকার জেনারেল অং সানের মেয়ে সু চি’র ১০ বছর ধরে তার দুই ছেলে অ্যারিস ও অ্যালেজান্ডারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। একইসঙ্গে এখনও তার নাতি-নাতনিদের দেখার সুযোগও পাননি তিনি।

তবে সুচি’র মুক্তি পাওয়ার দিন বিকালে তিনি অ্যারিসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন বলে ব্যাংককের ব্রিটিশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, সু চি’র ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ২০ বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বড় ধরনের জয় পাওয়ার পর থেকেই সু চিকে গৃহবন্দী করে দেশটির জান্তা। একইসঙ্গে কখনোই তাকে বা দলটিকে ক্ষমতায়ও যেতে দেওয়া হয়নি।

এদিকে ৭ নভেম্বর আবারও নির্বাচনের আয়োজন করে দেশটির জান্তা সরকার।

কিন্তু প্রতারণার অভিযোগ এবং দলের নেত্রীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ায় দুই দশকের মধ্যে প্রথম অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন বর্জন করে এনএলডি। ফলে দলটির মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। এখন মুক্তির পর সু চি’র প্রধান কাজ দলটির পুনর্গঠন।

এদিকে নির্বাচন বর্জনের কারণে দলটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। কিন্তু জান্তার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা সু চি’র মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। এক কর্মকর্তা সোমবার এ তথ্য জানায়।

এ বিষয়ে পরবর্তী পদপে নিয়ে সু চি’র সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে তার দল সূত্রে জানা যায়।
 
এ বিষয়ে সু চি’র এক আইনজীবী কাই ইউন বলেন, ‘জান্তার বিরুদ্ধে বিশেষ কোনো আপিল করার বিষয়টি নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করবো। ’

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১২০১ ঘন্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।