কোপেনহেগেন সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কোনো চূড়ান্ত আইনি চুক্তি না হওয়া বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদীরা হতাশ হয়েছিলেন। হতাশ হয়েছিল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশেগুলোও।
টেকপার্ট : গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন নিয়ন্ত্রণে আপনি কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন যা কানকুনের জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের দেশগুলোর সম্মিলিত একটি বাধ্যবাধকতামূলক চুক্তি করার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে?
ক্রিস্টিয়ানা : আমার মহাসচিব দেখছেন বিশ্বের দেশগুলো কানকুনে চূড়ান্ত কোনো চুক্তি করতে চায় না। এর পরিবর্তে তারা এই সম্মেলনের মূল বিষয়টাকে অন্যভাবে নিচ্ছে। যার ফলে এ সম্মেলনে যা হবে তা হলো একটি বিশ্বাসযোগ্যতা ও নির্ভরশীলতার বৈশ্বিক চুক্তি।
টেকপার্ট : গত ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন সম্মেলনের পর থেকে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে জলবায়ু বিষয়ে লক্ষ্য পুনর্মীমাংসার একটি বড় চ্যালেঞ্জ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বায়ুমণ্ডলে গ্যাসের নিঃসরণ কমানো এবং তাদের কৌশল নিবৃতির জন্য তহবিল গঠনে আপনি কীভাবে প্রস্তাব উত্থাপন করবেন?
ক্রিস্টিয়ানা : যা-ই হোক এসব মতানৈক্য একসময় মিটমাট হয়ে যাবে, একটা বড় মাত্রার আস্থা অবশ্যই দেখা দেবে। আমি বিশ্বাস করি এটা তারা পারবে। এই আস্থা সৃষ্টিশীলভাবেই সবাই নেবে এবং গণ্ডির বাইরে এসে সবার পছন্দের একটি চুক্তিতে পৌঁছতে তারা সক্ষম হবে।
টেকপার্ট : গত বছর মহাসচিব বান কি মুন গুরুত্বের সঙ্গে জানিয়েছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ের অগ্রগতির জন্য নারীরাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
ক্রিস্টিয়ানা : নারীরাই সবচেয়ে বেশি জয়বায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের শিকার এবং এদের বেশিরভাগই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে। ঠিক একই সময়ে নারীরাই বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে তাদের সংসারের যাবতীয় সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে। আমি মনে করি সম্মিলিত নারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্ভাবনা খুঁজে বের করা প্রয়োজন। কারণ নারীর মাধ্যমেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবে।
টেকপার্ট : মেক্সিকো উপকূলে তেল ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে মীমাংসার ধরনটি আপনি কীভাবে দেখছেন?
ক্রিস্টিয়ানা : গভীর সমুদ্রে তেলের জন্য অদূরদর্শী এই কূপ খননের আজ আমরা নিজেরাই ক্ষতির শিকার। এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট
ওবামা খুব দ্রুত গুরুত্ব দিয়েছেন। এই তেল ছাড়ানো নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশেল মধ্যে আরও একটি কলহের
বিষয় যেখানে ব্যাপকভাবে বিকল্প জ্বালানির সংস্থান আছে। এই ছড়িয়ে যাওয়া তেল আমাদের আরও একবার মনে করিয়ে দেয় ভবিষ্যতে তেলে ওপর নির্ভর করে থাকলে আমাদের চলবে না। আমাদের অবশ্যই খুঁজতে হবে কীভাবে আমরা শক্তি পাব।
টেকপার্ট : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধানে সহায়তার ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরগুলোর কী ভূমিকা দেখছেন?
ক্রিস্টিয়ানা : এই ভূমিকা খুবই সমালোচিত। প্রত্যেক দেশের সরকারেরই জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একটি রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা দরকার। হাজারো সমস্যার সমাধানের জন্য সরকারের অর্থভাণ্ডার পর্যাপ্ত নয়। এক্ষেত্রে টাকা আসবে প্রাইভেট সেক্টর থেকে এবং ওই ফ্রেমওয়ার্ক মেনেই তা সহায়তার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। আর অবশ্যই পরস্পর একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময় : ১৭১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১০