ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সুদানে চলছে ভোট, বিরোধী দলের বর্জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৫
সুদানে চলছে ভোট, বিরোধী দলের বর্জন

ঢাকা: সুদানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিরোধী দলবিহীন জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের পর পঁচিশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে আরো পাঁচ বছর মসনদে দেখা যাবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকসহ দেশটির আপামর জনগণ।



তিন দিনব্যাপী এ নির্বাচনে সোমবার (১৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা। সেই সঙ্গে প্রবাসী সুদানিদের জন্য ভোটের দিন ধার্য হয়েছে ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল। ফলাফল ঘোষিত হবে ২৭ এপ্রিল।

এক কোটি ত্রিশ লাখের বেশি মানুষ এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। দেশজুড়ে প্রায় এগারো হাজার কেন্দ্রে চলবে ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনে অন্তত ২৫ শতাংশ নারী ভোট নিশ্চিত করতে কোটা পদ্ধতি চালু করেছে সুদান সরকার।

তবে রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরনের ব্যাপারে সুদান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। সেই সঙ্গে সুদানের সর্বত্র শান্তি-শৃঙ্ক্ষলা স্থাপিত না হলে সেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় বলেও তাদের মত।

আলি আদেল খেদার (১৯) নামে এক ভোটার বলেন, টেলিভিশনসহ সব জায়গায় আমি বশিরকেই দেখতে পাই। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন থেকে শুরু করে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো, সবগুলোই বশিরপন্থি।

আব্দাল্লাহ আব্দেল রহমান (২২) নামে এক ছাত্র জানান তিনি ভোট দেবেন না। কারণ নির্বাচনের ফলাফল আগে থেকেই জানা।

তিনি বলেন, সবচেয়ে ভালো উপায় হল নির্বাচন প্রত্যাখ্যান। আমরা পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস করি না। কারণ সরকার তাদেরকে হুমকি দেবে। পর্যবেক্ষকরা কিছুই করতে পারবে না।

আব্দাল্লাহ বলেন, নির্বাচনে জালিয়াতির সকল পথই সরকারের জানা। শুধুমাত্র বিপ্লবের মাধ্যমেই পরিবর্তন সম্ভব। কোনো নতুন নেতৃত্বের অধীনে বিপ্লব হতে হবে। দুঃখের বিষয়, সুদানে এখন কোনো নেতা নেই।

তবে বশিরের পক্ষে মত দেওয়া লোকেরও অভাব নেই। আলি সালাহ (১৯) নামে এক ভোটারের ধারণা, সুদানকে কীভাবে শাসন করা দরকার, তা বশিরের মতো ভালো কেউ জানে না। আর এ কারণেই তিনি তাকেই ভোট দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে, তৃণমূল পর্যায় থেকে নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচি পরিচালনা করছে বিরোধী দলগুলো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সরাসরি ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বশিরকে প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। এই নির্বাচনকে তারা ‘রক্তের নির্বাচন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তবে নিরাপত্তা ইস্যুতে বেশ চিন্তিত সুদান সরকার। দারফুর, ব্লু নাইল ও দক্ষিণ কর্দোফান প্রদেশে সহিংসতার ঘটনা সরকারের কপালে চওড়া ভাঁজ ফেলেছে। এদিকে, সশস্ত্র সংগঠনগুলো ইতোমধ্যেই নির্বাচন প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সারা দেশে ৭৫ হাজার পুলিশ নামিয়েছে সরকার।

নির্বাচন কমিশনার মুখতার আল-আসাম জানিয়েছেন, দক্ষিণ কর্দোফানের ছয় এলাকা আর দারফুরের একটি এলাকা বাদে দেশজুড়ে ১৮ প্রদেশের সব স্থানেই ভোটগ্রহণ চলবে। ওই সাতটি এলাকায় বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে বলে ভোটগ্রহণ সম্ভব নয়।

সুদানের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকছে আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইন্টারগভর্নমেন্টাল অথরিটি অন ডেভেলপমেন্ট (আইজিএডি), দ্য অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি) ও আরব লীগ।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৫
আরএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।