ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জয় পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো এরদোয়ানের একেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৫
জয় পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো এরদোয়ানের একেপি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ান

ঢাকা: তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ সংসদ নির্বাচনে জয় পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি)। এ ফলাফলের কারণে রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রেসিডেন্টশাসিত করার পরিকল্পনা ভেস্তে গেলো এরদোয়ানের।

তাছাড়া, এখন সরকার গঠনে সমমনা কোনো দলের দ্বারস্থও হতে হবে একেপিকে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে সোমবার (৮ জুন) বেসরকারি এ ফলাফল জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে, সরকারি ফলাফল প্রকাশ করা হবে বিদেশি কেন্দ্রগুলোর ভোট গণনা শেষে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এরদোয়ানের প্রেসিডেন্ট শাসিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও একক সরকার গঠনে ক্ষমতাসীন দল একেপির প্রয়োজন ছিল ২৭৬ আসনের, কিন্তু তারা পেয়েছে ২৫৮ আসন। মোট গৃহীত ৯৯.৯৪ শতাংশ ভোটের মধ্যে তাদের ভোটপ্রাপ্তির হার ৪০.৮ শতাংশ। তাই, এখন এরদোয়ানের একেপিকে সরকার গঠনের জন্য সমমনা কোনো দলের সঙ্গেই জোট বাঁধতে হবে। তবে, এরদোয়ানের সমালোচক দলগুলো কোনো ধরনের জোট বাঁধার সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে।

৫ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি নাগরিকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয় রোববার (৭ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে, চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ শেষে শুরু হয় ভোট গণনা। ভোট গণনা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি ফলাফল পাওয়া যেতে থাকে।

ফলাফলে দেখা যায়, একেপির ২৫৮ আসনের বিপরীতে প্রধান বিরোধী দল বামপন্থি রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ২৫.২ শতাংশ ভোট পেয়ে অর্জন করেছে ১৩২ আসন। আর রক্ষণশীল একেপির প্রতি অপেক্ষাকৃত সহনশীল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি) ১৬.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে অর্জন করেছে ৮১ আসন। তবে, সবচেয়ে বড় চমক উপহার দিয়েছে কুর্দি সমর্থিত আরেক বামপন্থি দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি)। একেপির কড়া সমালোচক বলে পরিচিতি দলটি ১৩.১ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতে নিয়েছে ৭৯টি আসন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বৃহত্তম ক্ষমতাসীন একেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের জোট গঠন করা ছাড়া সরকার গঠন সম্ভব নয়। আর এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে জোট বাঁধতে সম্মতি দিতে পারে কেবল এমএইচপিই।

সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের পর ৪৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল যদি সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়, তবে ফের নির্বাচন আহ্বান করবেন প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে সেই নির্বাচন।

তবে, ২০০৩ সাল থেকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতাসীন একেপি এতো বড় ধাক্কার পর আবারও নির্বাচনে যাওয়ার ঝুঁকি না নিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

নির্বাচনের এই ফলাফলকে ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের বিজয় এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনে প্রবণ এরদোয়ানের পরাজয়’ হিসেবে দেখছে বিরোধী দলগুলো।

২০০৩ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে এখন প্রেসিডেন্টের কুরসিতে আসীন এরদোয়ান। তিনি তুরস্ককে প্রেসিডেন্টশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে ৯২ বছরের পুরোনো সংবিধান পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। এজন্য সংসদের ৫৫০ আসনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু নির্বাচনে তার দল সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলো

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৫/আপডেট ০৯২৪ ঘণ্টা
এইচএ

** তুরস্কে অনুষ্ঠিত নির্বাচন এরদোয়ানের জন্য বড় পরীক্ষা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।