ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভূমিকম্পে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন ১০ লাখ নেপালি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৫
ভূমিকম্পে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন ১০ লাখ নেপালি ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: স্মরণকালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন হিমালয়কন্যা নেপালের প্রায় ১০ লাখ অধিবাসী। দেশটির জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনের ‘দুর্যোগ পরবর্তী মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।



প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান গোবিন্দ রাজ পোখারেল বলেন, ভূমিকম্পের আগে নেপালে দরিদ্রতার হার ছিল ২৩.৮ শতাংশ। দুর্যোগের পর মোট জনসংখ্যার আড়াই থেকে সাড়ে তিন শতাংশ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন।

গত ২৫ এপ্রিল নেপালে রিখটার স্কেলে ৭.৯ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর সতের দিনের মাথায় গত ১২ মে আবারও একটি নতুন ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দেশটি। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৪। এই দুই ভূমিকম্প ছাড়াও এ পর্যন্ত নেপালে সাড়ে তিনশ’র বেশি পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। শক্তিশালী দুই ভূমিকম্পে নড়ে ওঠে দেশটির ৭৫টি জেলার ৩৬টি। এর মধ্যে ১৪ জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক।

ভূমিকম্পের কারণে নেপালে এ পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার লোকের প্রাণহানীর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২১ হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে ঘরছাড়া হয়েছেন ১০ লাখ নেপালি।

জাতীয় পরিকল্পনা কমিশন শক্তিশালী দুই ভূমিকম্প ও পরাঘাতগুলোর কারণে দেশটিতে সম্পদহানীর আর্থিক পরিমাণ হিসাব করেছে পাঁচশ’ ১৩ কোটি মার্কিন ডলার। সেই সঙ্গে বিভিন্নখাতে বৈদেশিক আয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একশ’ ৮৮ কোটি ডলার।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই মুহূর্তে পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের জন্য নেপাল সরকারের প্রয়োজন ছয়শ’ ৬৬ কোটি মার্কিন ডলার।

আগামী ২৫ জুন প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে নেপাল কর্তৃপক্ষ। গত তিন দশক ধরেই ‘মানব উন্নয়ন সূচকে’ দেশটির উন্নতি ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু মারাত্মক এই দুর্যোগের কবলে পড়ে নেপালের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পের কারণে দেশের কৃষি, পানি ও পয়নিঃস্কাশন ব্যবস্থা এবং জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। দুর্যোগের কবলে পড়া জনগোষ্ঠীর বাসস্থান ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত অথবা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় জীবন নির্বাহ মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, নেপালের ২৬.৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী ভূমিকম্পে আঘাতপ্রাপ্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দা। এই সংখ্যা ২০১৩ সালে দেশের দরিদ্রতার হারের চেয়ে বেশি। সে বছর নেপালে দরিদ্রতার হার ছিল ২৪.৮ শতাংশ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ।

সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় এনে ভূমিকম্পের ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নেপালের ৭ লাখ থেকে ৯ লাখ ৮২ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন বলে প্রতিবেদনে জানায় পরিকল্পনা কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৫
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।