ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডস উত্তেজনা বাড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডস উত্তেজনা বাড়ছে

ঢাকা: তুরস্কের দুই মন্ত্রীকে নেদারল্যান্ডসে প্রবেশ করতে না দেয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

তুরস্কের দুই মন্ত্রীকে প্রবেশে বাধা দিয়ে কূটনৈতিক সর্ম্পক ক্ষতিগ্রস্ত করায় নেদারল্যান্ডসকে মূল্য দিতে হবে বলেও সর্তক করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইপ এরদোগান। এর প্রতিক্রিয়ায়, ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট তুর্কি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন।

এরদোগানের প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করতে গণভোট আদায়ে নেদারল্যান্ড্‌সের বসবাসরত তুর্কিদের মধ্যে প্রচারণা চালাতে রটারডামে এক সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন দুই তুর্কি মন্ত্রী। তবে তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি ডাচ কর্তৃপক্ষ।

তুরস্কের পরিবারবিষয়ক মন্ত্রী ফাতমা বেতুল সায়ান কায়া সড়ক পথে রটারডাম পৌঁছান। কিন্তু ডাচ পুলিশ তার প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করে তাকে জার্ম‍ান সীমান্তের দিকে নিয়ে যায়। অন্যদিকে এরদোগানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু আকাশ পথে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার প্রবেশ প্রত্যাখান করে ডাচ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে রটারডামে তুরস্কের সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করে দেয় ডাচ পুলিশ। এ সময় সমবেত তুর্কিদের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি হলে সেখানে জলকামান ব্যবহার করে ডাচ পুলিশ। প্রায় ৪ লাখ তুর্কি বংশোদ্ভ‍ূত লোকজন নেদারল্যান্ডসে বসবাস করে। আঙ্কারা তাদের ভোট পেতে আগ্রহী।

ডাচ সরকার বলছে নেদারল্যান্ডসের সাধারণ নির্বাচনের আগে এ ধরনের সমাবেশ উত্তেজনায় ইন্ধন জোগাবে। এদিকে বিভিন্ন দেশে সমাবেশ করা নিয়ে জার্মানসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিব্রতকর সর্ম্পকের সৃষ্টি হয়েছে তুরস্কের।

প্রবেশ প্রত্যাখাত হওয়ার পর তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ড্‌সকে ফ্যাসিজমের রাজধানী হিসেবে মন্তব্য করেছেন। ডাচ-তুর্কি সর্ম্পককে নেদারল্যান্ডস বিসর্জন দিয়েছে অভিযোগ তুলে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান সর্তক করে বলেন, এ জন্য মূল্য দিতে হবে।

নেদারল্যান্ড্‌স সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, আমি ভেবেছিলাম নাৎসিবাদ শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু আমি ভুল। নাৎসিবাদ পশ্চিমে জীবিত।

গত সপ্তাহে এরদোগান জার্মানির বিরুদ্ধেও নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের একই ধরনের শব্দ ব্যবহার করেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, গত কয়েকদিনে জার্মানি ও নেদারল্যান্ড্‌স এ ইসলাম ফোবিয়ার প্রতিফলন দেখেছি।

ডাচ ও জার্মানিতে নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের অবশিষ্টাংশ রয়ে গেছে এরদোগানের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে জার্মান চ্যান্সেলর অঙ্গেলা মারকেল ও নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন।

পশ্চিমা গণতন্ত্রবিরোধী বক্তব্য ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তুরস্কের উত্তেজনাপূর্ণ সর্ম্পকের জের ধরে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী লারস লোক্কা রাসমুসেন তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত করেছেন।

নেদারল্যান্ডসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে আর্ন্তজাতিক সংগঠনগুলোর প্রতি তুরস্কের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, তুরস্ক চাপের কাছে নতি স্বীকার না করা তার সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, তুর্কি গর্বিত জাতি, নেদারল্যান্ডসও গর্বিত জাতি। আমরা এই ধরনের হুমকি এবং ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারি না।

মার্ক রুট বলেন, তার সরকার দ্বন্দ্ব কমাতে কাজ করছে। যদি তুরস্ক দ্বন্দ্ব বাড়ানো পছন্দ করে, আমরা অবশ্যই প্রতিক্রিয়া দেখাবো। কিন্তু এ সমস্যা সমাধানে আমরা সব কিছু করতে পারি।

কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নেদারল্যান্ডসে বসবাসরত তুর্কিদের বিষয়ে ডাচ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ডাচ নাগরিক, তাদের তুরস্কেও ভোটের অধিকার রয়েছে। বুধবার নেদারল্যান্ডসের সাধারণ নির্বাচনের আগের এ কঠিন সময়ে কূটনৈতিক ‍যুদ্ধে জড়িয়েছে নেদারল্যান্ডস। যেখানে অভিবাসীদের সঙ্গে ডাচ্ পরিচয় ও সর্ম্পক ইস্যু। ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তুরস্কে ডাচ কূটনৈতিক নিরাপত্তার দায়িত্ব তুরস্ক কর্তৃপক্ষের।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
এমইউএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।