আদালতের রায়ে বলা হয়, স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ভ্রমণেচ্ছু যাত্রীদের সঙ্গে রাইড শেয়ার করা হলে, তা ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী পরিবহন সেবা বলে গণ্য হবে।
আদালত উবারকে পরিবহন সেবা হিসেবে ঘোষণা করায় প্রতিষ্ঠানটিকে ইউরোপের শ্রম ও নিরাপত্তা নীতিমালা এবং প্রচলিত ট্যাক্সি সংগঠনগুলোর নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে।
উবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আদালতের এ রায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যকলাপে খুব সামান্যই পরিবর্তন আনবে।
উবারের একজন মুখপাত্র বলেন, ইউরোপের অনেক অঞ্চলেই উবার প্রচলিত পরিবহন আইনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। সুতরাং আদালতের ঘোষণায় তেমন বিচলিত নয় প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রায় প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।
ইউরোপে ২০১১ সালে উবারের কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই একের পর এক বাধার সম্মুখীন হয় স্মার্টফোন অ্যাপ ভিত্তিক ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। ইউরোপের কোথাও কোথাও উবার চালকের উপর ট্যাক্সি চালকদের হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। তাছাড়া উবারের বিরুদ্ধে ইউরোপের পরিবহন সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনে বেশ কিছু ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান।
প্রথম থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসে উবার। অভিযোগে বলা হয়েছিল, উবার প্রচলিত পরিবহন ও শ্রম আইন মেনে চলছে না। কিন্তু উবারের দাবি, তারা কোনো পরিবহন প্রতিষ্ঠান নয়, বরং একটি ডিজিটাল সামাজিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান।
স্প্যানিশ ট্যাক্সি সংগঠনের সঙ্গে উবারের বিবাদের জের ধরে ২০১৪ সালে বার্সেলোনায় শুনানি শুরু হয়। উবারের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ২০১৫ সালে বার্সেলোনার বিচারক মামলাটি ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসে (ইসিজে) পাঠান। অবশেষে ইসিজের ঘোষণা ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষেই গড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে উবার। খুব অল্প সময়েই এর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিশ্বজুড়ে। সাত বছরে পাঁচ শতাধিক শহরে নিজেদের কার্যক্রম বিস্তার করে প্রতিষ্ঠানটি। দ্রুত প্রসার ঘটায় প্রচলিত ট্যাক্সি সেবার সঙ্গে উবারের অসম প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এ কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ট্যাক্সি সংগঠন ও শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিবাদের মুখে পড়তে হয় উবারকে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এনএইচটি/এমজেএফ