চতুর্দিকে সাগরঘেরা দ্বীপটির আতঙ্কিত বাসিন্দারা যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে। ৬শরও বেশি লোক ভয়ে দ্বীপ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
কর্তৃপক্ষ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলের এই দ্বীপ থেকে সব মানুষকে সরে যেতে বলেছে। তারা এরই মধ্যে দ্বীপের সব বাসিন্দাকে দ্রুত ও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কিছু নৌকা ও ডিঙ্গি নৌকা পাঠিয়েছেন। উদগীরিত ছাইভস্ম, লাভা ও উৎক্ষিপ্ত পাথরখণ্ড আগ্নেয়গিরির নিচের গ্রাম-জনপদকে কার্পেটের মতো ঢেকে দিয়েছে। বলা যায়, সবকিছু এখন ফুটখানেক ছাইয়ের নিচে ঢাকা পড়ে গেছে।
ভূকম্পন বিশেষজ্ঞরা এই অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ব্যাপক ভূমিধস ও সুনামি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। হাজার বছর ধরে ঘুমিয়ে থাকা এই আগ্নেয়গিরি ৫ জানুয়ারি কী কারণে হঠাৎ জেগে উঠল তার কারণ খুঁজছেন তারা। ইতিহাসে আগে কখনোই এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা না ঘটায় এর গতিবিধির ওপর নজর রাখার প্রয়োজনীয়তাও কেউ কখনো বোধ করেনি। হঠাই জেগে উঠে আগ্নেয়গিরিটি বোদ্ধাদের পর্যন্ত যারপরনাই চমকে দিয়েছে।
উইওয়াক জেলার প্রশাসক রিকি ওয়োবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, অবস্থা খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
রাবাউল ভোলক্যানোলজিক্যাল ইরাপশন বা আরভিও নামের একটি সংস্থা বলেছে, দ্বীপটির গঠন খাড়া হওয়ার কারণে অগ্ন্যুৎপাতের প্রভাবে সেখানে ব্যাপক ভূমিধস হতে পারে। তাছাড়া উত্তপ্ত লাভার কারণে সেখানে সুনামির সৃষ্টি হতে হতে পারে। এ মুহূর্তে দ্বীপে কারোরই অবস্থান করা নিরাপদ নয়’’।
আরভিও আরো জানিয়েছে, "দেখে শুনে মনে হচ্ছে আগ্নেগিরির অগ্ন্যুৎপাতের ব্যাপক ধাক্কায় সাগরের নিচে পশ্চিম দিকে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। ’’
ডারউইন ভোলক্যানিক আশ অ্যাডভাইজরি সেন্টারের কর্মকর্তা ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘জেগে ওঠার পর থেকেই আগ্নেয়গিরিটি দিনরাত মুহুর্মুহু উদগীরণ ঘটিয়ে চলেছে। উত্তপ্ত ছাইয়ের ঘন মেঘ বিশাল কুণ্ডলি পাকিয়ে অনবরত পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে উড়ে চলেছে। তবে ছাই ও গ্যাসীয় কুণ্ডলি এখনও বিমান উড্ডয়নের জন্য বড় কোনো ঝুঁকি হয়ে দেখা দেয়নি। ’’
তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চ্যারিটি সামারিটান এভিয়েশন নামের একটি সংস্থা দ্বীপটির সব বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছে। তাদের দাবি, ভাগ্যক্রমে এখনো কোনো প্রাণহানি ঘটেনি বা কেউ আহত হয়নি।
উল্লেখ্য, সংস্থাটির নিজস্ব সি-প্লেন দ্বীপটির চারপাশে নিয়মিত চক্কর দিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক পোস্টে অলাভজনক এই সংস্থা আরও জানায়, শনিবার থেকে অগ্ন্যুৎপাতের শক্তি ও ব্যাপকতা অবিশ্বাস্যভাবে বেড়ে গেছে।
আগ্নেয়গিরির দ্বীপ বলে কথিত কাদোভার দ্বীপটির অবস্থান পাপুয়া নিউগিনির মূল ভূখণ্ডের উত্তর উপকূল থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে।
বাংলাদেশ সময়:১৮০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
জেএম