বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, এ নিয়ে কথাবার্তা প্রায় পাকাপাকি। ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের এ সংক্রান্ত চুক্তিটি সম্পাদিত হলে লস এঞ্জেলেস টাইমস ফিরে যাবে স্থানীয় মালিকানায়।
এটা হলে পত্রিকার নীতি-কৌশলেও আসবে বড় ধরনের পরিবর্তন। তাতে করে ব্রান্ড নেম হিসেবে লস এঞ্জেলেস টাইমস নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। আর কর্পোরেট প্রবৃদ্ধিতে তা নতুন করে অবদান রাখবে।
এ ব্যাপারে বর্তমান কর্পোরেট মালিক ট্রংক (Tronc) কোম্পানি এবং ধনকুবের সুন-শিয়ং দুপক্ষই অবশ্য এ মুহূর্তে কিছু বলছে না। কিন্তু বিশ্বস্ত দুটি সূত্র জানাচ্ছে, চুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে শেষ মুহূর্তের দরকষাকষি চলছে দুপক্ষের মধ্যে।
কর্পোরেট মালিক ট্রংক (Tronc) ঋণের দায় মেটাতেই পত্রিকা বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে কোম্পানি তাদের বিপুল দায়দেনা মেটাবে। সেই সঙ্গে তাদের অন্যসব পত্রিকায় ডিজিটাল স্ট্রাটেজির বাস্তবায়ন করবে। যা না করে আর উপায় নেই। ছাপানো পত্রিকার ঘানি আর কতো দূর টানা যায়!
এসব পত্রিকার মধ্যে আছে শিকাগো ট্রিবিউন, ওরল্যান্ডো সেন্টিনেল, সাউথ ফ্লোরিডা সান সেন্টিনেল ও ব্যাল্টিমোর সান।
সুন-শিয়ং ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক নিউজ গ্রুপটির অর্থাৎ লস এঞ্জেলেস টাইমস ও স্যান ডিয়েগো ইউনিয়ন-ট্রিবিউনের পেনশনের দায়ও নিজের কাঁধে তুলে নেবেন।
লস এঞ্জেলেস টাইমস-এর ব্যাপারে এরই মধ্যে নিউ ইয়র্ক টাইমসে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে পত্রিকাটির দুরবস্থার কথা উঠে আসে।
তাতে বলা হয়, কোনো ধনকুবেরই এটি বাঁচাতে আর আগ্রহী নন। অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ২০১৩ সালে ২৫ কোটি ডলার দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টকে কিনে নেন। এবার লস এঞ্জেলেস টাইমসকে উদ্ধারে এগিয়ে এলেন ধনকুবের প্যাট্রিক সুন-শিয়ং।
ফোর্বস-এর হিসেব অনুয়ায়ী সুন-শিযং-এর মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলার। তিনি Tronc-এর শেয়ারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্রেতাও বটে।
লস এঞ্জেলেস টাইমসকে কিনে নেওয়াটা ধনকুবের সুন-শিয়ং-এর জন্য এক উল্লেখযোগ্য কীর্তি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে তার নামযশ-প্রোফাইল রাতারাতি বেড়ে যাবে। নাগরিক সমাজে, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তার ভাবমূর্তি আলো ছড়াবে।
অথচ গত বছরও তিনি লস এঞ্জেলেস টাইমস কেনার জন্য ট্রংক-এর কাছে ধর্না দিয়ে বিফল মনোরথ হয়েছিলেন। কিন্তু ট্রংক-এর উঁচকপালে ভাব এবার ধার-দেনার কারণে ঝুঁটি নামিয়েছে। সুন-শিয়ং-এর টাকার কাছে বশ মেনে লস এঞ্জেলেসের মালিকানা তুলে দিতেই হচ্ছে তাদের।
একেই বলে ‘‘যারে নিন্দে, তারে পরে পিন্দে’’। ছাপানো পত্রিকার মালিকের দেমাগের ঝুঁটিও এভাবেই কাত হলো। কাল বাদে পরশু লস এঞ্জেলেস টাইমস-এর শিরোদেশে শোভা পাবে নতুন মালিকের নাম---প্যাট্রিক সুন-শিয়ং!!
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮
জেএম/