ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘বাপু’কে জানার অত্যাধুনিক শিক্ষালয়  

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৮
‘বাপু’কে জানার অত্যাধুনিক শিক্ষালয়   অত্যাধুনিক শিক্ষালয়

নয়া দিল্লি থেকে: তিনি ভারতবাসীর বাপু (বাবা), অহিংস আন্দোলনের অগ্রদূত, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী নেতা, জাতির পিতা, তিনি মহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। সত্যাগ্রহ, লবণ আন্দোলনের এই নেতার প্রভাব তাই ভারতবাসীর উপর প্রবল প্রতাপে অধিষ্ঠ।
 

নতুন প্রজন্মের কাছেও গান্ধী চিরউজ্জ্বল। তবু নতুন অনেক সময় মানে না, অস্বীকার করে, ভুল বোঝে পুরাতনকে।

আবার সেই পুরাতন নতুনের মাঝে আনতে পারে নবরেনেসাঁস। গণতন্ত্র, দেশপ্রেম, সর্বদলীয় এক বিদেশনীতিতে তাই ভারত নিঃসন্দেহে এ উপমহাদেশে দৃষ্টান্ত। সেই দেশ তাদের মহান নেতা গান্ধীকে তাই নতুন করে জাগ্রত রাখতে কোনো কার্পণ্য করেনি।  
ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়ার জয়জয়কার যুগে গান্ধীকেও এখন উপস্থাপন করা হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উৎকর্ষে। ২০১৬ সালে দিল্লিতে গড়ে তোলা হয়েছে প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্র। আদতে এটিকে বলা যায় গান্ধী মিউজিয়াম। যেখানে গান্ধীকে উপস্থাপন করা হয়েছে ডিজিটালি। সুন্দর, পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি, রুচিশীল, শৈল্পিক এক আবহে মাল্টিমিডিয়ার সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে বর্তমান প্রজন্ম, প্রবাসে থাকা ভারতীয়, সর্বোপরি সর্বসাধারণের জন্য এ কেন্দ্র।
 
পরিচালনা করে ভারত সরকার। সুরম্য ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঢুকেই হাতের ডানে-বাঁয়ে চোখে পড়ে সব ভারতীয় ক্লাসিক পেইন্টিংস। শুধু গান্ধীকে নানারূপে, নানাভাবে জানার জন্য একটি অংশ। মূলত এটিই মূল আকর্ষণ। ঘরভর্তি গান্ধীর বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন সময়ের ছবি, ব্যবহৃত জিনিসপত্রের রেপ্লিকা, আবক্ষমূর্তি।  
অত্যাধুনিক শিক্ষালয়প্রোজেক্টরের সাহায্যে দেয়ালে টাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখানো হয়েছে গান্ধীর বিভিন্ন মুভমেন্ট, জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ঘটনা। দেয়ালে টাচ করে শোনা যাবে গান্ধীর কণ্ঠ কিংবা দেখা যাবে ভিডিও। সঙ্গে টেক্সট তো আছেই।
 
বিশাল একটি অংশ জুড়ে আছে বাপুর জীবনের গতি পরিবর্তন করে দেওয়া ২১ বছরের দক্ষিণ আফ্রিকা জীবন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের প্রথম প্রবাসী হিসেবে ২১ বছর ছিলেন গান্ধী। সেখানে থাকাকালীন তার আন্দোলন, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, পড়াশোনা প্রভৃতি বিষয়ে নানা প্রশ্ন, ভিডিও রয়েছে এখানে। রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে এসে ভারত ভ্রমণের নানা ক্লিপস। সেই ভ্রমণ থেকে আন্দোলন, স্বাধীনতা পর্যন্ত গান্ধীর অবদান।
ঘরের মাঝে কাচের বক্সে সাজিয়ে রাখা তার ব্যবহৃত চিরপরিচিত গোল চশমাসহ বিভিন্ন উপকরণ। রয়েছে লেটার প্রেস। গান্ধীর আমলের সেই লেটারপ্রেসের সেই রেপ্লিকা রাখা হয়েছে এখানে। রয়েছে গান্ধীর ছাপানো চিঠি।  অত্যাধুনিক শিক্ষালয়
পাশের একটি রুমে রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। প্রচুর সংখ্যক শিক্ষার্থী এখানে আসে গান্ধীকে জানতে। এ ক্লাসরুমে গান্ধীর চরকা, ড্যান্ডি মুভমেন্টসহ বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামের ভিডিও দেখানো হয়।
 
গান্ধীর মধ্যে যেন তরুণ প্রজন্ম তাদের ছায়া দেখতে পায় সেজন্য রাখা হয়েছে গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সুযোগ! মানে নিজেই কম্পিউটারে আঙুল স্পর্শ করে দেয়ালে এসে দাঁড়িয়ে বিভিন্নভাবে পোজ দিয়ে ছবি তোলা যাবে। মজার ব্যাপার হলো ছবি তোলার পর দেখা যাবে পাশে দাঁড়িয়ে স্বয়ং গান্ধীজি। নতুন এ প্রযুক্তি আনন্দের মাধ্যমে তরুণদের উজ্জীবিত করে।
 
এভাবে পুরো ঘরজুড়ে গান্ধী আর গান্ধী। মিউজিয়ামের এক তরুণ প্রতিনিধি পুরো মিউজিয়াম দিল্লি সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ঘুরিয়ে দেখান, বর্ণনা করেন প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্র, গান্ধী বা বাপুর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে। গান্ধীকে কত প্রয়োজন এখনও, তরুণরা এখনও তাকে কীভাবে গ্রহণ করে তার ছোট্ট উদাহরণ মেয়েটি। দিল্লি ভ্রমণকারীরা অবশ্যই একবার ঢুঁ মারতে পারেন অত্যাধুনিক এ মিউজিয়ামে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।