শনিবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, প্রায় নিয়মিতভাবে এমন নিখোঁজের ঘটনায় শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি বৈঠকে যোগ দিতে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অবস্থান করছেন গুতিয়েরেস। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। এ সময় ইউএন মহাসচিব বলেন, সত্য ঘটনা উদঘাটনে আমাদের জোর দাবি থাকবে। আমরা জানতে চাই আসলে কি ঘটেছে। কে এ ঘটনার পেছনে দায়ী। এ ঘটনায় আমি অবশ্যই উদ্বিগ্ন। আমি এর আসল সত্যটা জানতে চাই।
খবরে বলা হয়, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটে যান সৌদি রাজতন্ত্রের কড়া সমালোচক খাশোগি। কিন্তু সেখানে ঢোকার পর থেকেই ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান খাশোগি । এরপর থেকে আর তাকে দেখা যায়নি।
সাবেক স্ত্রীকে কনস্যুলেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে ভেতরে যান তিনি। পরে কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে স্থানীয় পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগ আনেন খাশোগির স্ত্রী। তার দাবি, তালাক সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে গিয়েছিলেন কনস্যুলেটে।
এদিকে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে বাক্যবিনিময় আর সন্দেহের তীর ছোড়াছুড়িতে জড়িয়েছে সৌদি আরব। তবে তুরস্ক পুলিশের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকা খাশোগিকে সৌদি কর্তৃপক্ষই হত্যা করেছে। যদিও এ ধারণা উড়িয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। তারা বলছে, কনস্যুলেটে কাজ সেরেই ‘বের হয়ে গেছেন’ খাশোগি।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স আব্দেল আজিজ বিন সৌদ বিন নায়েফ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিকে বলেন, আমরাও প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে আগ্রহী। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, খাশোগি যে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই খুন হয়েছেন, তার অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং হাতে পেয়েছে আঙ্কারা। অডিও রেকর্ডে বিশ্বাসযোগ্য ও ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য মিলেছে, যেখানে বোঝা যায় সৌদি থেকে আসা স্কোয়াড খুন করেছে খাশোগিকে।
ওই অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং হাতে থাকা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘অডিওতে স্পষ্ট বোঝা যায় তার (খাশোগি) স্বর ও আরবিভাষী লোকদের স্বর। সেখানে বোঝা যায়, কিভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং পরে খুন করা হয়েছে। ’
আরেকজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, খাশোগিকে সম্ভাব্য হত্যার অপারেশন ছিল ‘কুইক অ্যান্ড কমপ্লেক্স’ (তড়িঘড়ি এবং জটিল)। কনস্যুলেটে ঢোকার দুই ঘণ্টার মধ্যে তাকে খুন করা হয়। এরপর তার মরদেহ (ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে, এই সন্দেহের তীর তুবাইকির দিকে) খণ্ড খণ্ড করে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
এএইচ /