রোববার (২৫ নভেম্বর) ভোরে ইউক্রেনের ওই তিনটি জাহাজ ক্রিমিয়ার সমুদ্রসীমায় ঢুকে পড়লে রুশ বাহিনীর হাতে আটক হয়। কৃষ্ণসাগরের ওডেশা বন্দর থেকে আজভ সাগরের মারিপোল বন্দরে যাচ্ছিল জাহাজ তিনটি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, যুদ্ধজাহাজ আটকে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কট্টর ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদীরা কিয়েভে রুশ দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা আগুনের ফুলকি ছুড়তে থাকে, ছুড়তে থাকে ধোঁয়া গ্রেনেডও। দূতাবাসের সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে রাশিয়াবিরোধী স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে পুরো এলাকা। এসময় তাদের মুখে ‘রাশিয়া নিপাত যাক’ স্লোগানও শোনা যায়। এক পর্যায়ে দূতাবাসের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগও করে বিক্ষোভকারীরা।
পরিস্থিতি সামলাতে দাঙ্গা পুলিশ অ্যাকশনে গেলে তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা ধস্তাধস্তিতে জড়ায়। পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় দূতাবাসসহ গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে সামরিক আইন জারির আলোচনা শুরু হলে প্রেসিডেন্ট পোরোশেঙ্কো বিলে সই করে ফেলেন। সোমবারই তা ইউক্রেনীয় পার্লামেন্টে উত্থাপিত হওয়ার কথা। এই বিল পাস হলে সামরিক আইন ২৬ নভেম্বর থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা। এটি জারি থাকতে পারে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। এদিকে ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, উদ্ভূত পরিস্থিতে সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত রাখতে জেনারেল স্টাফকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা অনুসারে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে সামরিক বাহিনীরও।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, রাশিয়া ইউক্রেনের যে তিনটি যুদ্ধজাহাজ আটক করেছে, তার মধ্যে দু’টি গানবোট ও একটি টাগবোট। তিনটি জাহাজ আটক করার সময় গুলিও ছোড়া হয়। রাশিয়ার দাবি, এর মাধ্যমে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। আর ইউক্রেনের দাবি, রুশ বাহিনী ক্রিমিয়া সীমান্তে তাদের জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যেটা প্রকাশ্য আগ্রাসী তৎপরতা।
২০১৪ সালে ইউক্রেনে গৃহযুদ্ধের সময় রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। বর্তমানে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সশস্ত্রদল ওই অঞ্চল শাসন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এইচএ/