ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

করোনা ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে ভারতের শীর্ষ সাত ফার্মা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২০
করোনা ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে ভারতের শীর্ষ সাত ফার্মা করোনা ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে ভারতের শীর্ষ সাত

ঢাকা: নতুন করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগীতায় নেমেছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সাত ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি।

দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভারত বায়োটেক, সিরাম ইনস্টিটিউট, জাইডাস ক্যাডিলা, প্যানাসিয়া বায়োটেক, ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস, ম্যানভ্যাক্স এবং বায়োলজিক্যাল ই- এই সাতটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান ভারতে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে অন্যতম।

ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিন কোভাক্সিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছে, যা হায়দরাবাদে কোম্পানি তৈরি করছে। এটি গত সপ্তাহে মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে।

শীর্ষস্থানীয় ভ্যাকসিন সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া, চলতি বছরের শেষ নাগাদ কোভিড -১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরির আশা করছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা এ বিষয়ে বলেছেন, আমরা অ্যাস্ট্রাজেনিকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছি, যা তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে। এগুলি ছাড়াও, আমরা ২০২০ সালের আগস্টে ভারতে মানবদেহে পরীক্ষাও শুরু করবো। বর্তমান পরিস্থিতি এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর উপর ভিত্তি করে আমরা আশা করছি যে, এস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনটি এই বছরের শেষের দিকে পাওয়া যাবে।

তিনি আরও জানান, ইউএসভিত্তিক বায়োটেক ফার্মা কোডাজেনিক্সের সঙ্গে একটি লাইভ অ্যাটেনিউটেড ভ্যাকসিনের কাজও করছি, যা প্রাক-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন এবং কোডাজেনিক্স ছাড়াও, আমরা বিশ্বব্যাপী একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদনে অংশীদার হিসাবে যুক্ত করেছি। এর মধ্যে অস্ট্রিয়ার থিমিসসহ আরও দুটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছি।

অ্যাস্ট্রাজেনিকার সঙ্গে অংশীদারিত্বের বিষয়ে পুনাওয়ালা বলেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিকাশিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ১ বিলিয়ন ডোজ উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে একটি অংশীদারিত্বের অংশীদারিত্ব করেছে। এই ভ্যাকসিনগুলো ভারত এবং বিশ্বের মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলির জন্য দেওয়া হবে।

ফার্মা মেজর জাইডাস ক্যাডিলা জানিয়েছে, যে তারা সাত মাসের মধ্যে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করতে চায়। গত সপ্তাহে তারা প্রথম মানবদেহে ট্রায়াল শুরু করেছে। ফলাফল ইতিবাচক হলে ভ্যাকসিন আসতে আরো সাত মাস সময় লাগবে বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পঙ্কজ আর প্যাটেল।

হায়দরাবাদ-ভিত্তিক ভারত বায়োটেকও গত সপ্তাহে মানবদেহে ট্রায়াল শুরু করেছে। সংস্থাটি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) এর সহযোগিতায় এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে।

প্যানাসিয়া বায়োটেক গত জুনে বলেছিল, যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রেফানা ইনক-এর সঙ্গে আয়ারল্যান্ডে যৌথ উদ্যোগের ভিত্তিতে একটি ভ্যাকসিন প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছে। তখন তারা বলেছিল, যে ভ্যাকসিনের ৫০০ মিলিয়ন ডোজ প্রস্তুত করবে এবং আগামী বছরের শুরুর দিকে ৪০ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করতে পারবে।

জাতীয় দুগ্ধ উন্নয়ন বোর্ডের (এনডিডিবি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিকস অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে করোনা ভাইরাসটির একটি ভ্যাকসিন তৈরির জন্য একটি চুক্তি করেছে।

মাইভ্যাক্স এবং জৈবিক ই এর মতো অন্যরাও কোভিড-১৯ এর জন্য ভ্যাকসিন তৈরির জন্য কাজ করছেন।

ভ্যাকসিনগুলো সাধারণত একটি অ্যান্টিজেনের ক্ষতিকারক অনুলিপিসহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। ভ্যাকসিন পেতে প্রথমে প্রাণীদেহের উপরে প্রাক-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা, তার সুরক্ষা নির্ধারণ করা এবং এটির উদ্দীপনা প্রতিরোধের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আরও জানতে প্রথম স্তরের ক্লিনিক্যাল টেস্টিং করা হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে সুরক্ষা পরীক্ষা এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় কার্যকারিতা নিশ্চিত করা হয়।

বিশ্বব্যাপী, প্রায় ১৪০টি ভ্যাকসিন প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানিরা। এগুলোর মধ্যে প্রায় দুই ডজন মানবদের ট্রায়ালের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশের গ্লোব ফার্মাও প্রাক-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে অধিকতর ট্রায়ালে কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২০
ইইউডি/ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।