ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

চীনের সমালোচনা করলো মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২১ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২০
চীনের সমালোচনা করলো মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস দক্ষিণ চীন সাগর/ ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবেশী দেশগুলোর সরকারব্যবস্থা দুর্বল করে দিয়েছে চীন। মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস চীনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দ্য ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দূতাবাস চীনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনলো।

চীনের সমালোচনা করে মিয়ানমারের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলছে, চীন তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব খর্ব করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দূতাবাসটি বলছে, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের নানা অপতৎপরতা এবং হংকং নিয়ে দেশটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ‘প্রতিবেশীদের সার্বভৌমত্ব খাটো করার বড় নমুনা’।

যদিও দূতাবাসটি সম্প্রতি লাদাখে চীন-ভারতের সেনাদের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের বিষয়ে স্পষ্টভাবে কোনোকিছু উল্লেখ করেনি। তবুও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এই বিবৃতিতে চীন-ভারতের লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) পিপল লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) অপতৎপরতার বিষয়কেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।

অত্র অঞ্চলে চীনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দূতাবাস এটাই প্রথমবারের মতো সরাসরি আক্রমণ করে অবস্থান নিল।

মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপপ্রধান জর্জ এন সিবলেই সম্প্রতি দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতিতে একটি কলাম লেখেন।

সে কলামে তিনি এ অঞ্চলে চীনের নানা অপতৎপরতার বিষয় তুলে ধরেন।

তিনি লেখেন, চীন মহামারির সুযোগ নিচ্ছে। এই সময়ে দেশটি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের প্রতি অসম্মান করা অব্যাহত রেখেছে।

‘২০ বছর আগে করা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে চীন হংকংয়ে গণতন্ত্রের গালা টিপে ধরেছে। একইসঙ্গে পিআরসি (পিপল রিপাবলিক অব চায়না) আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের প্রতি অসম্মান প্রদর্শনপূর্বক দক্ষিণ চীন সাগরে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ’

হংকং/ছবি: সংগৃহীত

এদিকে মিয়ানমারে চীনা দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এ দাবির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।

চীনা দূতাবাসের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অভিযোগ প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে চীনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

২৬ জুন আসিয়ান সামিটে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতারা দক্ষিণ চীন সাগরে যে বিরোধ তা আন্তর্জাতিক আইনে সমাধান করতে একটি বিবৃতি ইস্যু করেন।

অভিযোগ রয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে যেসব সম্পদ (তেল, গ্যাস ও মাছ) রয়েছে তা থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোর (আসিয়ানভুক্ত) প্রবেশাধিকার ধীরে ধীরে সীমাবদ্ধ করে ফেলছে চীন।

সিবলেই বলছেন, এসব ঘটনা মিয়ানমার থেকে অনেক দূরে ঘটলেও দেশটির সঙ্গেও একই আচরণ করা হচ্ছে চীনের পক্ষ থেকে। অব্যাহত রয়েছে পরোক্ষ হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো এবং মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এর মাধ্যমে চীন ঋণের ফাঁদে ফেলেতে চায় বিভিন্ন দেশকে। বিশ্বকে এ বিষয়ে সতর্ক করা প্রথম দেশ হচ্ছে ভারত। আর মিয়ানমার বিআরআইয়ের অধীনে চীন-মিয়ানমার ইকোনমিক করিডোরের অংশীদার।

ঋণের ‘ফাঁদে’ আটকানোর কৌশল এবং প্রতিবেশীদের সার্বভৌমত্বের প্রতি অব্যাহত অসম্মান প্রদর্শন চীনকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২০
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।