ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নির্বাচনে রোহিঙ্গা রাজনীতিকদের প্রার্থিতা বাতিল করলো মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২০
নির্বাচনে রোহিঙ্গা রাজনীতিকদের প্রার্থিতা বাতিল করলো মিয়ানমার মায়ের সঙ্গে রোহিঙ্গা রাজনীতিবিদ আবদুর রশিদ

মিয়ানমারে জন্মগ্রহণকারী রাজনীতিবিদ আবদুর রশিদ; মুসলিম প্রধান রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব পাওয়া খুব স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তির মধ্যে তিনি একজন। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী।

আগামী নভেম্বরে মিয়ানমারে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থিতার আবেদন করেছিলেন আবদুর রশিদ। কিন্তু তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী কর্মকর্তারা তার পূর্বপুরুষের শিকড় ভিনদেশে বলে অভিযোগ করেছেন।

নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নতুন গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে রাজনীতিতে নামার প্রত্যাশায় আবদুর রশিদের মতো এক ডজন রোহিঙ্গা রাজনীতিবিদ আগামী ৮ নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থিতার আবেদন করেছিলেন।

তাদের মধ্যে ছয়জনের আবেদনই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন, এসব রাজনীতিক প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, তাদের জন্মের সময় তাদের মা-বাবা মিয়ানমারের নাগরিক ছিলেন। মিয়ানমারের নির্বাচনী আইন অনুসারে প্রার্থীর মা-বাবাকে মিয়ানমারের নাগরিক হওয়া বাধ্যতামূলক।

আবদুর রশিদ জানান, সরকারিভাবে যেসব কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে তার সবই সরবরাহ করা হয়েছে, তারপরও তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
২০১৭ সালে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্মা রোহিঙ্গা সংস্থার প্রধান তুন খিন বলেন, মিয়ানমারে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সমান সুযোগ থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক দাতাদের মিয়ানমারের নির্বাচনী সংস্থাকে অর্থায়ন বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আসন্ন সাধারণ নির্বাচন মিয়ানমারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক পরীক্ষা। এর মাধ্যমেই যাচাই হবে সামরিক শাসনের বেড়াজাল ছিন্ন করে দেশটিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি পাকাপোক্ত হবে কিনা।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস এবং তাদের বিপুল অধিকাংশই মুসলমান। ২০১৭ সালে আগস্টে রাখাইনে রাষ্ট্রীয় মদদে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা ও ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। প্রাণ বাঁচাতে সেই সময় সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

মিয়ানমার ‘রোহিঙ্গা’ টার্মটি কিংবা সম্প্রদায়কে আদিবাসী নৃগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। কয়েক শতাব্দী ধরে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস করার ইতিহাস উপেক্ষা করে মিয়ানমার তাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে উপহাস করে। মিয়ানমার সরকারের দাবি- রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে অননুমোদিত অভিবাসী হিসেবে দেশটিতে গিয়েছে। একের পর এক সামরিক সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রমাণের দলিলপত্রও ছিনিয়ে নিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২০
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।