ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাকোমা-বিশ্বের সবচেয়ে উদার শরণার্থী শিবির

নুসরাত জাহান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১০
কাকোমা-বিশ্বের সবচেয়ে উদার শরণার্থী শিবির

কাকোমা: মাথার ওপর জ্বলস্ত সূর্য এবং নিচে পাথুরে বৃষ্টিহীন উত্তর-পশ্চিম কেনিয়ার ৭৫ হাজার শরণার্থীর শিবিরটি যেন পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন যুদ্ধ ও সংকটেরই প্রতীক।

সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, দারফুর, ইথুপিয়া ও রুয়ান্ডার মত যুদ্ধবিধস্ত এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় সবাই এই কাকোমা শহরে এসেই জড়ো হন।

আর সঙ্গে করে নিয়ে আসেন নিজের দেশের ঐতিহ্য ও রীতি। যার সমন্ময়ে গড়ে উঠে আপেক্ষিক একটি সাদৃশ্য ।  

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কর্মকর্তা ইউসুফ হাসান বলেন, ‘সম্ভবত এটাই বিশ্বের সবচেয়ে উদার মনোভাব সম্পন্ন শরণার্থী শিবির। ’

যুদ্ধের কারণে দক্ষিণ সুদানের পলাতক বাসিন্দাদের জন্য ১৯৯২ সালে এ শিবিরটি নির্মিত হয়। পরে বিভিন্ন কারণে আরও কয়েকটি অঞ্চলের বাসিন্দা এখানে আশ্রয় নেন। বর্তমানে এখানে ১৪টি দেশের নাগরিক বসবাস করেন।

তবে প্রতিটি জনগোষ্ঠীরই বসবাসের ধরণ ভিন্ন। কেননা, প্রতিটি সোমালি আলাদা জায়গায় তাদের ক্যাম্প গড়ে তুলেছেন। একইভাবে কাটাতারের বেড়া দিয়ে একত্রে বসবাস করছে সুদানের কিছু পরিবার ।

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পাহাড়ি এলাকা দক্ষিণ কিভুর ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে আসা বায়ামাঙ্গু মাজিম্বা বলেন, ‘এখানে আমরা সবাই সহকর্মী ও প্রতিবেশীর মত বসবাস করি। ’

বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ‘খুব ভালভাবে একত্রে বসবাস’ করার বিষয়ে সম্মতি জানান জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মোহাম্মদ কাসিম। তবে খুব কাছাকাছি বসবাস করার কারণে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয় বলেও স্বীকার করে নেন তিনি।

এছাড়া ‘খাবার পানীয় নিয়ে প্রায়ই এখানে উত্তেজনা দেখা দেয়’ বলে জানান সংস্থাটির এক কেনিয় কর্মচারী। এমনকি মাঝে মাঝে একই গোত্রের মধ্যেও ঝামেলা দেখা দেয়।

তবে কয়েক রাত পর পরই স্থানীয় সশস্ত্র তারকানাদের হামলা ও শিবিরে অবস্থিত বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিবিরের এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের জীবন কয়েদীদের মত এবং আমাদের প্রায় সব কিছুরই ঘাটতি আছে। এখানে আছে কাঁটা, বিছা এবং সর্বোপরি শিবির থেকে এক পা বাইরে রাখলেই তারকানারা তোমাকে শেষ করে দেবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘খরচ করতে পারলে এখানে প্রয়োজনীয় সবই পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশীরা না বরং কিভাবে খাবার জোগাড় করা যায় এবং রুচিসম্মতভাবে বেঁচে থাকা যায়-এটাই আমাদের প্রধান সমস্যা। ’

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।