ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

ডিজিটাল পৌরসভা গড়তে চান খান হাবিবুর

সরদার ইনজামামুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
ডিজিটাল পৌরসভা গড়তে চান খান হাবিবুর মেয়র খান হাবিবুর রহমান/ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাগেরহাট: ‘মেয়র হিসেবে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডই আমার ওয়ার্ড। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তারাও পৌরসভার নাগরিক, যার ভোট দেননি তারাও।

সব এলাকার উন্নয়ন করাই আমার দায়িত্ব। সবাইকে নিয়ে ঐতিহ্যবাহী বাগেরহাটকে একটা ডিজিটাল ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ’

রোববার (০৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে পৌরসভা নিয়ে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি জানান বাগেরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র খান হাবিবুর রহমান।

মেয়র পদে নির্বাচনে জয়ের হ্যাট্রিক করা এই জনপ্রতিনিধি বলেন, আমাকে বাগেরহাটবাসী আবারও তাদের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। নির্বাচনের আগেও আমি পৌরসভার পানি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলাম। এখন আমার প্রথম কাজ পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করা। আর এর জন্য আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাব।

পানি সমস্যা সমাধান ছাড়াও আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে শহরের রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে চান তিনি। আর এ ক্ষেত্রে পুরনো অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সব সেবা বাস্তবায়ন করার প্রত্যয় তার।

পৌরবাসীকে পানি সরবরাহের জন্য বর্তমানে একমাত্র ভূগর্ভস্থ পানির উপরই নির্ভর করতে হয়। তাই সংকট এত প্রকট হয়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট সমাধানে শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদ ও পচা দিঘিকে কেন্দ্র করে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে বাগেরহাট পৌরসভার পানির সমস্যা আগামী ২০ বছরের জন্য সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন খান হাবিবুর রহমান।  

সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এই মেয়র প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯ হাজার ৮৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিনা হাসিবুল হাসান শিপন পান ৯ হাজার ৭৩৭ ভোট।

১৯৫৮ সলের ১ এপ্রিল যাত্রা শুরু করা বাগেরহাট পৌরসভা বর্তমানে প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভা উল্লেখ করে খান হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই স্বপ্নকে বাস্তবায়নে বাগেরহাট পৌরসভায় সব নাগরিক সুযোগ সুবিধা বাড়াবো। পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পৌরবাসীর সেবাপ্রাপ্তি সহজ করতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিতে চাই।

১৯৫৫ সালের ১৭ জুলাই বাগেরহাটের খারদ্বার এলাকায় জন্মগ্রহণ করা আওয়ামী লীগ নেতা খান হাবিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু ১৯৮৫ সালে।

তিনি বলেন, ছেলে বেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি ঝোক ছিলো অনেক বেশি। খেলার মাঠ থেকেই আসা রাজনীতির মাঠে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর ডা. মোজাম্মেল হোসেন (জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি) ও সাবেক সংসদ সদস্য মীর সাখাওয়াত আলী দারুর হাত ধরে শুরু বাগেরহাটে মাঠের রাজনীতি। এখনও ডা. মোজাম্মেলসহ স্থানীয় প্রবীণ নেতাদের পরামর্শ নিয়ে আছি রাজনীতির মাঠে।

খান হাবিবুর রহমান বলেন, আমার সারা জীবনের প্রাপ্তি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন। বঙ্গবন্ধু ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকা নিয়ে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারা আমার জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দের ছিল।

রাজনৈতিক জীবনে যত অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছি, সব ভুলে গেছি নৌকা প্রতীক পেয়ে। এই প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।

কতদিন ধরে নির্বাচন পরিকল্পনা করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে খান হাবিবুর রহমান বলেন, মেয়র থাকায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগাম আগ্রহ ছিল। তবে, দলের মনোনয়ন পাওয়ার আগ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। মূলত দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের চেয়ে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। কারণ স্থানীয় সরকারে থাকা জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ বেশি পান। তার মতে ‘মুলত স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাজের প্রতিফলন হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ’ এজন্য এই খাতে সরকারের বরাদ্দ আরও বাড়ানোর আহ্বান তার।

আগামী পৌর নির্বাচনে অংশ নিবেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে কি করতে হবে। এখন এসব নিয়ে ভাবছি না। তবে, সবসময় দল ও জনগণের পাশে থাকতে চান বলে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।