ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

জামায়াত-শিবিরমুক্ত কাটাখালির প্রতিশ্রুতি আব্বাসের

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
জামায়াত-শিবিরমুক্ত কাটাখালির প্রতিশ্রুতি আব্বাসের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কাটাখালি (পবা, রাজশাহী) থেকে ফিরে: কয়েকদিন আগেও জামায়াত-শিবিরের ককটেলের বিকট শব্দে ঘুম ভাঙতো পৌরসভার মানুষের। বারুদের ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে নিয়ে স্কুলে পা রাখতে হতো কোমলমতি শিশুদের।

বাবা-মা চিন্তায় থাকতেন কখন তাদের শিশুরা নিরাপদে বাড়ি ফিরবে। আর উন্নয়ন? উন্নয়নের বালাই নেই পৌর এলাকার ত্রিসীমানায়।

একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলানিউজকে এসব কথা বলছিলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালি পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আব্বাস আলী। দীর্ঘ ১৬ পছর পর পৌর মেয়রের চেয়ারটি এসেছে আওয়ামী লীগের দখলে।

এর আগে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতের দখলেই ছিল পবার কাটাখালি পৌরসভা। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে প্রশাসক হিসেবে প্রথমে নিয়োগ পান স্থানীয় জামায়াতের আমির মাজিদুর রহমান।

এরপর কয়েকদফা নির্বাচনে মাজেদুর রহমানই জয়ী হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় হওয়ায় এ পৌরসভা এতদিন ছিল জামায়াতের দখলেই। তবে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে জামায়াতের ঘাঁটি তছনছ করে প্রথমবারের মতো জয় ছিনিয়ে এনেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্বাস আলী।

রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের (নৌকা) আব্বাস আলী বিজয়ী হন ৬ হাজার ৬৭৯ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (জগ) জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৩৭ ভোট।

জয়ের নেপথ্য কারণ সম্পর্কে আব্বাস আলী বলেন, জামায়াতের দখলে থাকা এই পৌরসভার মানুষ এবার ব্যালটে নাশকতার জবাব দিয়েছেন। এখানে আর জামায়াত-শিবিরের নৃশংসতা দেখতে চায়না মানুষ। জামায়াত-শিবিরের নাশকতা দমনে সফল হওয়ায় বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে।

জামায়াত-শিবিরের প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন যাত্রায় শামিল হয়ে সাধারণ মানুষ নৌকাকে বেছে নিয়েছে বলে জানান তিনি।

দীর্ঘ আট বছর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। ক্ষমতায় না থাকলেও মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থেকেছেন। তাই দলমত নির্বিশেষে সব দলের মানুষ তাকে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে বিজয়ী করেছেন বলে জানান নৌকার মেয়র আব্বাস আলী।

পবার কাটাখালি পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আব্বাস আলী বলেন, সাবেক মেয়র জামায়াত নেতা নাশকতা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেননি পৌরবাসীকে। শিবির লালন করে এলাকার মানুষকে কেবলই আতঙ্কিত করে রেখেছেন। দীর্ঘ দিন উন্নয়নবঞ্চিত করে রেখেছিলেন সাধারণ মানুষকে।

তাই উন্নয়ন দিয়েই পৌরপিতার কাজ শুরু করবেন বলে জানান মেয়র আব্বাস আলী।

এক প্রশ্নের জবাবে আব্বাস আলী জানান, ব্যক্তিগত কারণে নিজে উচ্চ মাধ্যমিকের পর লেখাপড়া না করতে পারলেও এলাকার শিক্ষার হার বাড়াতে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করবেন। এরপর এলাকার রাস্তা-ঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করবেন। সড়কে বৈদ্যুতিক বাতির সংখ্যা বাড়াবেন, পৌরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করবেন। এগুলো হবে তার প্রথম চ্যালেঞ্জ।

আব্বাস আলী বলেন, পৌরসভার মানুষ অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর আমি তাদের আকাঙ্ক্ষার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাবো। এই পৌরসভা জামায়াত-শিবির মুক্ত করবো। ভবিষ্যতে রাজশাহীতে উন্নয়নের মডেল পৌরসভা হিসেবে কাটাখালির নাম নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।