ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

অন্যের সাফল্য বিনষ্ট করার পরিণতি

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
অন্যের সাফল্য বিনষ্ট করার পরিণতি

কিছু মানুষ আছে অন্যের সাফল্য সহ্য করতে পারে না। কেউ আল্লাহর রহমতে তার থেকে এগিয়ে যাবে, এটা সে সহ্য করতে পারেন না।

তাই সে প্রতিনিয়তই তার সাফল্য ম্লান করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। তার মনোবল ভেঙে দিতে সামনে-পেছনে মিথ্যা ও অযৌক্তিক সমালোচনা করে।

সফল হওয়ার জন্য নিজের কাজে মনোযোগ না দিয়ে অন্যের ক্ষতি করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি আঁটে। মিথ্যা প্রচারণা চালায়, যা কখনোই একজন মুমিনের কাজ হতে পারে না, বরং এ ধরনের কাজ মানুষকে আরও পেছনে নামিয়ে দেয়।  

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ সেই লোকের, যে সামনে-পেছনে মানুষের নিন্দা করে। ’ (সুরা: হুমাজাহ, আয়াত: ১) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থেকো।

কারণ কোনো কোনো অনুমান পাপ এবং তোমরা একে-অন্যের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে-অন্যের গিবত কোরো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোসত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে করো। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু। ’ (সুরা: হুজুরাত, আয়াত: ১২) তাছাড়া সাফল্য আল্লাহর নিয়ামত।

মহান আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকেই সফল করেন। যারা অন্যের সাফল্যে অযৌক্তিকভাবে ব্যথিত হয়, তারা মূলত আল্লাহর সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারে না বলেই ব্যথিত হয়। কারণ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা কি আপনার রবের রহমত বণ্টন করে? আমিই দুনিয়ার জীবনে তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করি এবং তাদের একজনকে অন্যের ওপর মর্যাদায় উন্নীত করি, যাতে একে অন্যের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে; আর আপনার রবের রহমত তারা যা জমা করে তা থেকে উত্কৃষ্টতর। ’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ৩২) তাই কোনো মুমিন তার অন্য ভাইয়ের সাফল্যে ব্যথিত হতে পারে না। তাকে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হতে পারে না।

আল্লাহ যদি কাউকে সফলতা দিতে চান, কারো হিংসা, বিদ্বেষ ও মিথ্যা অপবাদ, ষড়যন্ত্র কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো অনুগ্রহ অবারিত করলে কেউ তা নিবারণকারী নেই এবং তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে কেউ তার উন্মুক্তকারী নেই। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান। ’ (সুরা: ফাতির, আয়াত: ২)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ কারো প্রতি রহমতের দৃষ্টি দিলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারবে না। এমনকি পুরো পৃথিবী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেও তার কিছুই করতে পারবে না। একবার রাসুল (সা.) ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বলেন, ‘জেনে রেখো, যদি সব মানুষ তোমার কোনো উপকারের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে ততটুকু উপকার করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। অন্যদিকে যদি সব মানুষ তোমার কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একতাবদ্ধ হয়, তাহলে ততটুকু ক্ষতি করতে সক্ষম হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার তাকদিরে লিখে রেখেছেন। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬)

অতএব, কারো সাফল্যে ব্যথিত না হয়ে খুশি হওয়া উচিত। তাকে সহযোগিতা করা উচিত। সফল হওয়ার জন্য নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে চেষ্টা করা উচিত। মহান আল্লাহ কারো চেষ্টাকেই বৃথা করেন না।  মহান আল্লাহ সবাইকে এই নিকৃষ্ট অভ্যাস ত্যাগ করার তাওফিক দান করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।