আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজের সময় তোমাদের সর্বোৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করো’। (সূরা আরাফ : ৩১)
এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে পোশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সাহাবায়েকেরাম ও তাবিঈগণও এ বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। যেমন- হাসান ইবনে আলী রা. সম্পর্কে এসেছে, তিনি নামাজের সময় সর্বোৎকৃষ্ট পোশাক পরতেন। একদিন কেউ তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন। তাই আমি আমার প্রভুর জন্য সুন্দর পোশাক পরি। (রুহুল মাআনি ৪/৩৪৯)
হাসান বসরি (রহ.) বলেন, তারা (সাহাবায়ে কেরাম গরমের কারণে) পাগড়ি বা টুপির ওপর সিজদা করতেন। (বোখারি ১/৮৬)
যুহাইর (রহ.) বলেন, আমি প্রখ্যাত তাবেয়ি আবু ইসহাক সাবিয়ীকে দেখেছি, তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ পড়েছেন। তিনি মাটি থেকে টুপি উঠিয়ে মাথায় পরেছেন। (তাবাকাতে ইবনে সাদ ৬/৩১৪)
তাই ফুকাহায়ে কেরাম নামাজে টুপি পরা সুন্নত বলেছেন এবং অবহেলা করে টুপি না পরে নামাজ পড়াকে মাকরুহ বলেছেন, যদিও নামাজ আদায় হয়ে যাবে। (ফাতাওয়া কাজিখান : ১/১৩৫)
আলেমরা এ ব্যাপারে একমত, টুপি পরা মুস্তাহাব এবং চার ইমামের সবাই বলেন, নামাজ আদায়ের সময় টুপি পরিধান করা মুস্তাহাব আর অবহেলা করে টুপি পরিধান না করে নামাজ পড়া মাকরুহ, যদিও নামাজ আদায় হয়ে যাবে (ফাতাওয়ায়ে কাজিখান : ১/১৩৫; রদ্দুল মুখতার : ১/৬৪০; ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া : ১/৫৬৫)
নামাজ অবস্থায় টুপি পড়ে গেলে সিজদা বা বসা অবস্থায় এক হাত দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া উত্তম। কিন্তু যদি এক হাত দিয়ে মাথায় পরা সম্ভব না হয় তাহলে টুপি না উঠিয়ে মাথা খোলা অবস্থায়ই বাকি নামায সম্পন্ন করবে।
এক্ষেত্রে মাথা খোলা অবস্থায় নামাজ পড়লে কোনো অসুবিধা হবে না।
প্রকাশ থাকে যে, দাঁড়ানো কিংবা রুকু অবস্থায় টুপি পড়ে গেলে তা উঠানোর চেষ্টা করা যাবে না। আর সিজদা বা বৈঠকের সময় এমনটি হলে উপরোক্ত পন্থায় উঠিয়ে পরে নিবে।
সূত্র: ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২০৩; শরহুল মুনইয়া পৃ. ৪৪২; দুরারুল হুক্কাম ১/১১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০২; রদ্দুল মুহতার ১/৬২৫
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
জেএইচ