ইসলাম হচ্ছে সর্বজনীন জীবন ব্যবস্থা। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি এমন কোনো বিষয় নেই, যার নির্দেশনা পবিত্র কোরআনে কারিম ও হাদিসে নেই।
সূরা নাসরের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের বিজয় উৎসব করার নিয়ম বাতলে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে, তখন মানুষদের তুমি দেখবে, তারা দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করছে। অতঃপর তুমি তোমার মালিকের প্রশংসা কর এবং তার কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা কর; অবশ্যই তিনি তওবা কবুলকারী। ’ -সূরা নাসর: ১-৩
এই সূরায় আল্লাহতায়ালা বিজয় অর্জনের পর দুটি কাজ করতে বলেছেন।
এক. বিজয় অর্জিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহান আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে তার দরবারে শোকরিয়া জ্ঞাপন করা।
দুই. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
আসলে স্বাধীন হওয়ার চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছু নেই। এ কারণেই আল্লাহতায়ালা নির্দেশ দিলেন, ‘তোমরা বিজয় লাভ করেছ, এখন তোমাদের কাজ হচ্ছে এ বিজয়ের জন্য আল্লাহর দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে কিংবা তাসবিহ পাঠ করে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। বিজয়ের দিনে যারা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, সেসব শহীদের জন্য দোয়া করা। সেই সঙ্গে তাদের শাহাদাত থেকে নতুন করে শপথ নেয়া, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকার, বাতিলের কাছে মাথা নত না করার এবং অন্যের কাছে নিজের স্বাধীনতা বিকিয়ে না দেয়ার। ’
আমরা মুসলমান। তাই বিজয় উৎসব করতে গিয়ে আল্লাহকে ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহ আমাদের বিজয় দান করেছেন, এটা আল্লাহর অপার অনুগ্রহ।
অষ্টম হিজরিতে ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা বিজয় করেন এবং মক্কার কুরাইশদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। নবী (সা.) বিজয়ের দিন শোকরিয়াস্বরূপ আট রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন।
আজ ১৬ ডিসেম্বর। আমাদের বিজয়ের দিন। এ দিনে আমরাও সাধ্যমতো নফল নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া জ্ঞাপন করতে পারি। সেই সঙ্গে কোরআনে কারিম তেলাওয়াত ও দান-খয়রাত ইত্যাদির মতো ভালো কিছু কাজ করতে পারি, যা যুদ্ধকালীন শহীদসহ অন্যদের উপকারে আসে, তাদের নাজাতের উসিলা হয়। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ইসলাম মতে বিজয় উদযাপনের তওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫
এমএ/