ইলহান উমর নামের এক সোমালি অভিবাসী মুসলিম নারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হয়েছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই মুসলিম নারী মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত হন।
তার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো- তিনি নিয়মিত ইবাদত-বন্দেগি করেন। ধর্মের বিধান পর্দা রক্ষার নিমিত্তে হিজাব পরিধান করেন। ধর্মানুরাগী হিসেবে তার বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। তাই তার বিজয়কে রীতিমতো ইতিহাস আখ্যা দেওয়া হচ্ছে গণমাধ্যমে।
নির্বাচনের কয়েকদিন আগে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমালি বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের ‘আপদ’ আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু ইলহানকে ভোটাররা ‘আপদ’ নয় বরং ‘আপন’ ভেবে নির্বাচিত করেছে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে।
মঙ্গলবারের নির্বাচনে মিনেসোটা থেকে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে স্থানীয় ডেমোক্রেট ফার্মার লেবার (ডিএফএল) পার্টির হয়ে বিজয়ী হন ইলহান।
২০ বছর আগে কেনিয়ার একটি শরণার্থী শিবির থেকে ইলহান যখন আমেরিকায় আসেন। তখন তিনি ছিলেন ১৪ বছরের কিশোরী। আমেরিকায় আসার পর মাত্র তিন মাসে ইংরেজি শেখেন। পরে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণের পর ইলহান উমর কমিউনিটি সংগঠক হিসেবে সক্রিয় হন। বর্তমানে তিনি নারী সংগঠন ‘উইমেন নেটওয়ার্কের’ পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন।
রাজনীতিতে ইলহান উমরের পথটি কখনোই নিষ্কণ্টক ছিল না। ২০১৪ সালে ডিএফএল পার্টির ককাস অধিবেশন চলাকালেই সাত থেকে আটজন ব্যক্তি তাকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পেটায়।
তবে এতেও হার মানেননি ইলহান উমর। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিখ্যাত সোমালি-আমেরিকান কমিউনিটি নেতা মাহমুদ নুর এবং দীর্ঘদিনের রিপ্রেজেন্টিটিভি ফিলিস কানকে হারিয়ে দলের প্রার্থিতা বাছাইয়ে জয়ী হন।
ইলহান উমরের রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচিত হওয়ার পথে সর্বশেষ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বয়ং রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নির্বাচনের সপ্তাহখানেক আগে মিনেসোটায় ট্রাম্প বলেন, ‘এই মিনেসোটায়, আপনারা যে প্রধান সমস্যা মোকাবেলা করছেন, তা হলো- এখানে প্রচুর ত্রুটিপূর্ণ সোমালি শরণার্থী বসবাস করছে। এই ব্যাপক সংখ্যক শরণার্থী আপনাদের জানাশোনা, সমর্থন এবং অনুমোদন ছাড়াই আপনাদের রাজ্যে প্রবেশ করেছে। ’
তবে ট্রাম্প সোমালি শরণার্থীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করলেও তা সোমালি বংশোদ্ভূত ইলহান উমরের বিজয় ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি।
তার বিজয়ে সোমালি-আমেরিকানরা মুসলিমরা ভীষণ খুশি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এমএইউ/