সুচালো ঠোঁটের ছোট্ট পাখিটির নাম মোচাটুনি। কলাগাছের ফুল ফুটলে এরা আসবেই।
কলাটুনিও বলা হয়। পাহাড়-সমতল সব জায়গায় পাওয়া যায়। তবে পুরোপুরি কলাগাছ নির্ভর পাখি।
মোচাটুনির ইংরেজি নাম Little Spider Hunter বা ছোট মাকড়সাভুক। সব ধরনের মাকড়সাই এদের প্রিয় খাবার। এরা অত্যন্ত চঞ্চল, ভীতু স্বভাবের পাখি। মোচাটুনি দেখতে মৌটুসি, নীলটুনির মতো। আকারে একটু বড়। শরীরের মাপ ঠোঁটসহ ১৫ সেন্টিমিটার। শুধু ঠোঁটটিই ৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ গোটা শরীরের তিনভাগের একভাগ। ঠোঁটের গড়ন চমৎকার- আগার দিকটা বুকের দিকে কিছুটা বাঁকানো। রং কালচে সবুজ। এদের বুক-পেটের দু’পাশসহ লেজের গোড়াটায় হলুদ রং বেশি। মাথা-গলা-পিঠ জলপাই সবুজ। লেজের আগায় সাদাটে ভাব। পা কালচে।
ফুলের মধু, মৌমাছি, মাকড়সা, মাকড়সার ডিমসহ নানা রকমের পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ খায়। নারকেল ফুলে যখন মৌমাছি বসে তখন এরা ওই মৌমাছিও ধরে খায়। নারকেল ফুলের রেণু ও মধু এদের খুব পছন্দ।
বাসা বাঁধে পৌষের শেষ থেকে আষাঢ়ের প্রথম দিকে। কলাপাতার তলায় মাচাং এর মতো করে বাসা বানায়। মানকচুর পাতা, কাঠবাদামের কচি পাতার তলায়ও বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে সাধারণত দু’টি। দু’টি পাখিতে পালা করে তা দেয়। ডিম ফোটে ১৫-১৭ দিনে। ছানারা উড়তে শেখে ১৯-২৩ দিনে। দর্জিরা যে কৌশলে হাতের দু আঙুলে সুতোর মাথায় গিঁট দেয়, এরাও ঠোঁট ও জিভ ব্যবহার করে সুতোর মতো উপকরণের মাথায় গিঁট দিতে পারে। টুনটুনি যদি হয় দর্জিপাখি এরা হলো মহাদর্জি পাখি।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশের পাখি, শরীফ খান
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
এসআই