ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রংরী... (প্রথম পর্ব)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১০
রংরী... (প্রথম পর্ব)

বেশ কিছুদিন ধরে রমা উদ্ভট উদ্ভট স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্নগুলো যে শুধু উদ্ভট তা না! একেবারে হ-য-ব-র-ল।

স্বপ্ন নিয়ে সে মহা চিন্তিত। চিন্তিত শব্দটার সামনে ‘মহা’ থাকাতে সে আরও বেশি চিন্তায় আছে। সে ভেবে পায় না -- বাংলা অভিধানে এই ‘মহা’ শব্দটার কী দরকার! এই শব্দটা না থাকলেই তো তার স্বপ্নগুলো ‘মহা দুঃস্বপ্ন’ না হয়ে শুধু ‘দুঃস্বপ্ন’ হতে পারতো। শুধু এ কারণেই বাংলা ভাষাবিদদের ওপর সে বিরক্ত। যদিও সাগরের সামনে মহা, মানবের সামনে মহা থাকলে মহাসাগর, মহামানব হয়। তবুও সে তার নিজের অভিধান থেকে এই শব্দটা বাদ দেবেই। এই প্রথমবারের মতো সে কোনো শব্দ তার অভিধান থেকে বাদ দিচ্ছে তা কিন্তু না! এর আগেও সে তার নিজস্ব অভিধান থেকে ১৪৩ শব্দ বাদ দিয়েছে। অনেকটা ঘটা করে সে এই শব্দগুলো বাদ দেয়। কোরবানীর ঈদের সময় যেমন গরু, ছাগল জবাই করা হয় ঘটা করে, ঠিক সে ভাবেই। কষ্ট দিয়ে। মানুষ কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায়! আর রমা কষ্ট পায়। অবশ্য তার অভিধান থেকে শব্দ জবাই করতে তার তেমন কোনো কষ্ট হয় না। আনন্দ পায় সে ঠিক সেই মানুষগুলোর মতো। রমা ছেলেটাই এরকম।

এই অন্যরকম রমা তখন খুব ছোট। সে মাত্র বাংলা বর্ণমালার ক,খ,গ... লিখতে-পড়তে শিখছে। বড় বোন নাসরিনের কাছে তার হাতে-খড়ি। তবে সে কিছুতেই অক্ষরগুলোকে তার আয়ত্তে আনতে পারছিল না। নিয়মিত বড় বোনের বকা-ঝকা খাওয়া ছিল সঙ্গী। ‘ক’ কে ‘ক’ না বলে তার মনে যা ইচ্ছা তাই বলে দিতো। যুক্তি দাঁড় করতো ‘আমি নিজে বুঝতে পারলেইতো হলো’। বুঝতে চাইতো না-- অন্যকেও তার লেখা বুঝতে হবে।

সেই থেকেই তার নিজস্ব লিপি তৈরির প্রচেষ্টা শুরু। গত ২৪ বছরে একভাবে সে সফলও। এখন তার নিজস্ব লিপি আছে। সে তার নিজস্ব লিপিতে লিখতে পারে, পড়তে পারে। তার মেয়ে বন্ধুকেও সে এই ভাষা ও লিপি শিখিয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে কম ব্যবহৃত ভাষা হিসেব তার উদ্ভাবিত ভাষা ও লিপির নাম গিনিজ বুকে উঠে যাওয়ার কথা! মাত্র দু’জন কোন ভাষা ও লিপি ব্যবহার করে? এ ধরণের প্রশ্ন বিসিএস পরীক্ষায় আসতেও পারতো! সঙ্গে তার নাম, আবিষ্কারক হিসেবে। তার উদ্ভাবিত ভাষার নামও উদ্ভট। ‘রংরী’। র’ তার নামের আদ্যর আর রী’ রীপুর নামের আদ্যর।

কয়েকদিন যাবৎ সে ভাবছিল একটা বিশেষ, না বিশেষ না! কারণ তার অভিধানে বিশেষ শব্দটা নেই। একটা ব্যাপার নিয়ে ভাবছে। সে মশা, মাছি, পিপড়েসহ ছোট ছোট কীট-পতঙ্গের ভাষা শিখবে। এই নিয়ে রীপুর  সঙ্গেও কথা বলেছে। অথচ কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। রমার অদ্ভুত স্বপ্ন দেখার এটাই কারণ।

চলবে...

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।