ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ছবিতে-গল্পে ছেলেবেলার শচীন

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৩
ছবিতে-গল্পে ছেলেবেলার শচীন

পুরো নাম শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। বয়স এখন ৪০।

তবু মায়ের কাছে আজও সেই ছোট্টটি। বাবা ছিলেন ঔপন্যাসিক। মা রজনী চাকরি করতেন বীমা কোম্পানিতে। জন্ম ভারতের বিখ্যাত শহর মুম্বাইয়ে। লেখালেখি করার কারণে বাবা রমেশ টেন্ডুলকারের গানের প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল। আর তার প্রিয় শিল্পী ছিলেন শচীন দেব বর্মণ। তাই প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে ছেলের নাম রাখলেন শচীন।

1-120

ছোটবেলায় দুরন্তপনার শীর্ষে ছিল এই বিস্ময় বালক। পাড়ার এমন কোনো ছেলে ছিল না যে শচীনের হাতের দু’একবার মার খায়নি। কম করে হলেও একটা কানমলা খেয়েছে। বাবা শখ করে ছেলের নাম একজন বিখ্যাত সংগীতশিল্পীর নামানুসারে রাখলেও ছোটবেলায় সংগীতের প্রতি তার কোনো টান ছিল না। যে ক্রিকেটেশ্বর হবে তার ক্রিকেটের প্রতিও কোনো টান ছিল না। শচীন টান অনুভব করতেন টেনিসের প্রতি। টানটা যেনতেন নয়। ব্যাপক টান।

4-420

কিন্তু বড় ভাই অজিত তার দুরন্তপনায় অতিষ্ঠ হয়ে শচীনকে ক্রিকেটের প্রতি টানতে থাকেন। তিনিই শচীনকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দেন। তার ধারণা ছিল ক্রিকেট খেলায় শচীন মজা পেলে হয়তো দুরন্তপনা কিছুটা হলেও কমবে। তাই ছোট ভাইকে ক্রিকেটে হাতেখড়ি দেন অজিত। কিন্তু অজিতের কথা ঠিকমতো শুনতে চাইত না শচীন। তাই বাধ্য হয়ে অজিত দ্বারস্থ হন তৎকালীন সময়ের খ্যাতনামা কোচ রামকান্ত আখেরকারের কাছে।

so-42

রামকান্ত প্রথম দর্শনে দুরন্ত শচীনকে পছন্দ না করলেও পরে শচীনের প্রতিভা দেখে বিস্মিত হয়ে যান। তিনি অজিতকে পরামর্শ দেন শচীনকে সারাদাশরাম বিদ্যামন্দির স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিতে। কারণ তখন এই স্কুল থেকে বেশ কয়েকজন নামকরা ক্রিকেটার উঠে এসেছিল। এ ছাড়া স্কুলটিতে ভালো একটি ক্রিকেট দলও ছিল। স্কুলের রুটিনের চাপে পড়ে দুরন্তপনা কমতে থাকে শচীনের। আস্তে আস্তে ক্রিকেটের মজা পেয়ে যেতে থাকে। তবে শচীনের ক্রিকেটের হাতেখড়ি কেবল বিদ্যামন্দিরেই সীমাবদ্ধ ছিল না।

তিনি এটার পাশাপাশি শিবাজি পার্কের কোচ রামকান্তের তত্ত্বাবধানেও ক্রিকেট দীক্ষা নিতেন। কোচের কাছে নিয়মিত নেটে অনুশীলন করতেন।

so-520

চার ভাইবোনের মধ্যে শচীন দুই নম্বর। দুই ভাই অজিত ও নিতিন। একমাত্র বোনের নাম সবিতা। চার ভাইবোনের মধ্যে বাবা-মায়ের কাছে শচীন ছিলেন সর্বাধিক আদুরে। ছেলেবেলায় ছিলেন ডানপিটে আর বড় হয়ে ঠিক তার বিপরীত। পুরোপুরি শৃঙ্খলিত জীবনে অভ্যস্ত করে নেন নিজেকে।

s-620s-620

মুম্বাইয়ের শারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরে ভর্তি হওয়ার পরই ক্রিকেট ব্যাট পুরোপুরি হাতে তুলে নেন। এ ক্ষেত্রে প্রেরণা ছিলেন বড় ভাই অজিত। শচীনের মধ্যে অসাধারণ ক্রিকেট প্রতিভা দেখতে পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে এ স্কুল ক্রিকেটেই বিরল এক সাফল্য পান শচীন।

2-220

এ বছর যে কয়টি ইনিংস খেলেন তার সবটিতেই সেঞ্চুরি হাঁকান। বন্ধুত্ব হয় ক্লাসমেট বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে। লর্ড হ্যারিস শিল্ড ইন্টার স্কুল ক্রিকেটে বন্ধু কাম্বলির সঙ্গে জুটি বেঁধে ৬৬৪ রান করেন। হইচই পড়ে যায় সারা ভারতে।

3-3201

শারদাশ্রম স্কুলে একটি ক্যাম্প পরিচালনা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান বিখ্যাত ফাস্ট বোলার ডেনিস লিলি। কিন্তু নিজের উচ্চতার কারণে ফাস্ট বোলিং নয়, ব্যাটিংয়ে মনোযোগের উপদেশ দেওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে নেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং প্রাকটিস করতেন শচীন। নেটে তিনি এতটাই ভালো করতে থাকেন যে, কোচ রামাকান্ত নিজেই অবাক। স্টাম্পের ওপর এক রুপির কয়েন রাখতেন কোচ রামাকান্ত। বলে দিতেন শচীনের উইকেট যে নেবে সেই পাবে ওই কয়েন।

92013

১৯৮৯ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ডাক পান জাতীয় দলে। খেলেছেন কপিল দেব, আজহার উদ্দিনদের মতো গ্রেট ক্রিকেটারদের সঙ্গে। পরবর্তীতে স্কুল জীবনের সুনাম দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে রেখে ১৬ নভেম্বর ২০১৩ সালে আবসর নিলেন। সারা বিশ্ব তাকে বিদায় জানালো অশ্রুসিক্ত নয়নে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৩
এএ/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।