এক ছিলো বুড়ি। সে ছিলো খুব গরিব।
অনেক আগে চাঁদ মাঝে মধ্যে পৃথিবীতে নেমে আসতো। চাঁদ ছিলো গোলাকার মোটা এক মেয়ে। তার শরীর ছিলো চর্বি আর মাংসে পরিপূর্ণ। প্রায়ই দেখতে দেখতে ক্ষুধার্ত বুড়ির জন্য চাঁদের খুব মায়া হলো। একদিন রাতে চাঁদ অাকাশ থেকে বুড়ির কুঁড়েঘরের উঠানে নামলো। বুড়িকে ডেকে চাঁদ বললো, তুমি তোমার খাবার হিসেবে আমার শরীর থেকে মাংস কেটে রাখতে পারো। বুড়ি চাঁদের কথা শুনে খুব খুশি হলো।
তারপর থেকে প্রতি সন্ধ্যেবেলায় চাঁদ মাটিতে নেমে আসতো। আর বুড়ি চাঁদের শরীর থেকে মাংস কেটে রাখতো। কিন্তু এতে করে চাঁদ দিনে দিনে ছোট হয়ে যেতে লাগলো। সঙ্গে সঙ্গে চাঁদের আলোও যেতে লাগলো কমে। এদিকে, সব মানুষের মনে একই প্রশ্ন, চাঁদ এতো ছোট হয়ে যাচ্ছে কেন?
এরমধ্যে বুড়ির বাড়ি বেড়াতে এলো তারই দুঃসম্পর্কের এক নাতনি। একদিন বুড়ির নাতনি দেখলো, সন্ধ্যেবেলা চাঁদ অাকাশ থেকে নেমে আসার পর বুড়ি ছুরি আর ঝুড়ি হাতে চাঁদের কাছে গিয়ে চাঁদের শরীর থেকে মাংস কেটে নিচ্ছে। এ ঘটনা দেখে সে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলো। তাই দেরি না করে নাতনি আশেপাশের সবাইকে ব্যাপারটা বলে দিলো। সব শোনার পর প্রতিবেশীরা ঠিক করলো বুড়ির গতিবিধির ওপর লক্ষ্য রাখবে।
এর পরের সন্ধ্যেবেলায় যখন চাঁদ মাটিতে নেমে এলো আর বুড়ি ছুরি হাতে চাঁদের কাছে এগিয়ে গেলো তখন সব প্রতিবেশীরা মিলে শোরগোল করে উঠলো। সবার চিৎকারে ভয় পেয়ে চাঁদ আকাশে ফিরে গেলো। আর কখনই সে পৃথিবীতে নেমে আসেনি। অন্যদিকে, বুড়ি খাবারের অভাবে না খেয়ে মারা গেলো।
তারপর থেকেই বেশিরভাগ দিন চাঁদ লুকিয়ে থাকে। মাসে একবার সে চিকন হয়ে দেখা দেয় তবে পরে আবার মোটা হয়ে যায়। যখন চাঁদ মোটা হয়ে যায় তখন সে পৃথিবীকে আলোর জোয়ারে ভাসিয়ে দেয়। তবে তা বেশিদিন থাকে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৬
এসএমএন/এসএনএস