ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

প্রেতাত্মা (পর্ব-১) | শোয়েব হাসান

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
প্রেতাত্মা (পর্ব-১) | শোয়েব হাসান

ঘটনাটা আমি আর মনে করতে চাই না। কিন্তু আপনাকে কথাগুলো বলা দরকার তাই বলছি , তরফদারকে উদ্দেশ্য করে বলে ইব্রাহীম।

এই মুহূর্তে তারা বসে আছে ইব্রাহীমের বাড়ির বারান্দায়। ঝিঁ ঝিঁ পোকাগুলো এক নাগাড়ে ডেকে যাচ্ছে। প্রাচীন অন্ধকারকে আরও রহস্যময় করে তুলছে সে ডাক। মনে হয় যেনো কালের গহ্বর থেকে অতৃপ্ত প্রেতাত্মারা ডেকে যাচ্ছে অনবরত।

ঘড়ির দিকে তাকায় তরফদার। এগারোটা বেজে গেছে। সে যাওয়ার জন্য তাড়া দেয় ইব্রাহীমকে। কান্তিপুর স্কুলের পিয়ন ইব্রাহীম। ওই গ্রামেই তার বাড়ি। আজ সন্ধ্যায় তরফদার তার বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন। এই বিদ্যালয়ের নাইটগার্ড   হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। রাতে তার বাসায় খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।  
-একটা পান খান জর্দা দিয়ে, সুঘ্রাণ জর্দা ।
পানের ডালাটা এগিয়ে দেয় তরফদারের দিকে। তা থেকে একটা পান নিয়ে আয়েসি ভাবে চিবুতে থাকে তরফদার। জর্দার ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে আশপাশ। তরফদার আধশোয়া অবস্থায় চৌকিতে। এই বারান্দায় কোনো বেড়া নেই। আসল ঘর থেকে একটু দূরে। বসন্তের প্রাণ জুড়ানো ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। এর কারণেই কিনা একটু আগে যাওয়ার তাগাদার কথা ভুলে গেছে সে। তরফদারের জন্য স্কুলেই একটা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে, রাতে থাকার জন্য। স্কুল এখান থেকে প্রায় মাইলখানেক দূরে। নতুন লোক তরফদার, তাই তাকে এগিয়ে দিয়ে আসতে হবে ।
-ইব্রাহীম ভাই কি যেন বলতে চেয়েছিলেন তখন?
-আপনি নাইটগার্ড হিসেবে জয়েন করেছেন। রাত জেগে স্কুল পাহারা দিতে হবে এটাই নিয়ম। কিন্তু স্কুলের পিছনে না পারতে যাবেন না।
- কোনো সমস্যা ভাই ?!
-খারাপ জিনিস আছে। আপনাকে ভয় দেখানোর কোনো ইচ্ছা ছিলো না। তাছাড়া ভূতে আমার বিশ্বাস নেই। কিন্তু চোখের সামনে দেখা জিনিস অবিশ্বাসও তো করতে পারি না ।
-খুলে বলুনতো ব্যাপারটা ।
ডালা থেকে একটা পান নেয় ইব্রাহীম।   রসালো কামড় বসায় সেই পানে। কিছুক্ষণ পর বলতে শুরু করে সে। সেবার প্রচণ্ড গরম পড়েছে। তীব্র গরমে সবাই অতিষ্ট। হঠাৎ করেই গ্রামে একটা কুকুরের আগমন ঘটে। এর আগে দেখা যায়নি কুকুরটাকে কোথাও। কালো মিশমিশে। কিছুদিনের মধ্যেই বোঝা যায় কুকুরটা পাগল। দু’জনকে কামড়িয়েছে। হাসপাতালে বসে দু‘জনই  জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উপায়ান্তর না পেয়ে গ্রামের যুবকরা দলবেঁধে কুকুরটাকে মারতে নামে। কিন্তু কুকুরটা কীভাবে যেন টের পেয়েই হাওয়া হয়ে যায়। কোথাও তার টিকিটি খুঁজে পাওয়া যায় না।

চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।