ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-২৪)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-২৪) রহস্য দ্বীপ

কিন্তু কেটলিটা যত ধীরেই গরম হোক না কেন এখানে তাতে কেউ কিছু মনে করছে না।
ওরা সৈকতের বালুর ওপর শুয়ে, সন্ধ্যার আকাশ দেখে, বনের পটপট আওয়াজ শুনে এবং কাঠের ধোঁয়া আর মধুমতি ফলের মিশেলে এক প্রকার ঘ্রাণ পায়। শেষে কেটলি থেকে বাষ্প বেরিয়ে আসে এবং হিস্ হিস্ শব্দ শুরু হয়। ওটা ফুটতে শুরু করে।

নোরাই কোকা বানায় এবং গোল করে রাখা মগগুলোতে ঢালে। দুধ নেই, সে বলে।

কিন্তু চিনি আছে।
ওরা ওদের কেক চিবায় ও কোকা পান করে। তাতে দুধ না থাকার পরও ওদের কাছে স্বাদে গন্ধে তা সবচেয়ে সেরা বলেই মনে হয়।

আগুন দেখতে আমার ভালো লাগছে, নোরা বলে। ওহ্, জ্যাক, তুমি কেন ওটা পা দিয়ে নিভিয়ে ফেললে?
বুঝলে না, জ্যাক বলে, আজ রাতে লোকেরা আমাদের খোঁজে বের হতে পারে, তা তো জানোই, আর দ্বীপ থেকে কোনো ধোঁয়ার কুণ্ডলি সুন্দর মতো আমাদের লুকাবার জায়গার জানান দিতে পারে! এসো, এখন, সবাই বিছানায় যাই! কালকে সবার খুব খাটতে হবে!

পেগি তাড়া করে মগ ধোয়। তারপর সবাই মিলে ওদের সবুজ, লতা-পাতার সেই শোবার ঘরের দিকে যায়। এরই মধ্যে সূর্যটা ডুবে গেছে। গোধূলি একটু আগের সেই রহস্য দ্বীপটাকে চুরি করে সঙ্গে নিয়ে গেছে।

এখানে আমাদের প্রথম রাত! দাঁড়িয়ে হ্রদের শান্ত জলের দিকে তাকিয়ে, মাইক বলে। আমরা চারজন, একেবারে একা, মাথার ওপর কোনো ছাদ না থাকলেও, আমি খুবই সুখী!

আমিও! সবাই একসঙ্গে বলে ওঠে। মেয়েরা গুল্মের ঝোপের ভেতর তাদের লুকোনো সবুজ ঘরে যায় ও কাপড় ছাড়ে। দারজা ছাড়া একটা ঘরে কাপড় ছাড়া ঘুমানো মুশকিল। মাইক ওদের দিকে ছেঁড়া একটা পুরাতন চাদর ছুঁড়ে দেয়।

এটা ওপরে ছড়িয়ে দাও, সে বলে। রাতে শীত পড়তে পারে, প্রথমবার ঘুমাচ্ছি। ভয় পেওনা, কি পাবে?
না, পেগি বলে। তোমরা দু’জন তো কাছেই আছ, আর, যাই হোক, ভয় পাবার কী আছে?
ওরা নরম লতা-পাতার ওপর শুয়ে পড়ে, এবং পুরাতন চাদরটা ওপরে বিছিয়ে দেয়। স্প্রিং-এর মতো গুল্ম ওদের বাড়িতে ব্যবহার করা আগেকার বিছানার চাইতে নরম। মেয়ে দু’টা একে ওপরকে জড়িয়ে ধরে চোখ বুজে। ওরা তখনই ঘুমিয়ে পড়ে।

কিন্তু ছেলে দু’জন ওত শিগগিরই ঘুমায় না। ওরা ওদের গুল্মের বিছানায় শুয়ে রাতের সব শব্দ শুনতে থাকে। সজারুর চলাচলে সময় ওরা মৃদু ঘোঁত ঘোঁত শব্দ শুনতে পায়। মাথার ওপর বাদুড়ের ডানা ঝাপটানি দেখে। এবং পিঠের নিচে দুমড়ানো বুনো সুগন্ধি পাতা আর মধুমতি ফলের ভাসমান ঘ্রাণ নাকে এসে লাগে। নিচে নলখাগড়ার ভেতর থেকে একটা গায়ক পাখি গেয়ে ওঠে এবং এরপর অন্য আরকেটা গায়ক পাখি তার জবাব দেয়।

চলবে...

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।