ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-২৬)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-২৬) রহস্য দ্বীপ

ওটা কি ব্ল্যাকবার্ড না? মাইক জিজ্ঞেস করে।
না, একটা রিড-ওবলার, জ্যাক। দিনের বেলার যে কোনো গায়ক পাখির চেয়ে ওদের গলা অনেক সুরেলা! শোনো, পেঁচার ডাক শুনতে পাচ্ছ?

ওওওও-ওওও-ওওও-ওওওও! গা শিরশির করা লম্বা একটা শব্দ ভেসে আসছে; ওওও-ওওও-ওওও-ওওও!
ওটা ইঁদুর আর ভৌল শিকারে বেরিয়েছে, জ্যাক বলে। আকাশের ওই তারাগুলো দেখছ, মাইক?

খুব দূরে বলে মনে হচ্ছে না? রাতের রক্তিম আকাশের দিকে চেয়ে, মাইক বলে, ওপরের আকাশটা তখন মিটিমিটি অজস্র তারায় ছাওয়া।

আমি বলছি, জ্যাক, আমাদের সঙ্গে এভাবে পালিয়ে এসে আর তোমার এই রহস্য দ্বীপটা ভাগাভাগি করে দারুণ একটা কাজ করেছ।

আমার জন্য শুধু দারুণই হয়নি, জ্যাক বলে। আমি এমনটাই চাইছিলাম। আমি যেমনটা করতে চাই হুবহু তাই করি। আশা করছি কেউ আমাদের খুঁজে পাবে না এবং ফিরিয়ে নিতে আসবে না, তবে কেউ যাতে আমাদের খুঁজে না পায় সে ব্যপারে আমি খুব সতর্ক আছি! এরই মধ্যে আমি দারুণ সব বুদ্ধি এঁটে ফেলেছি!

কিন্তু মাইক সে কথা শুনতে পায় না। তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে, সে পেঁচা আর তারাদের কথা ভুলে যায়; ঘুমের অতলে তলিয়ে যায় এবং স্বপ্নে দেখে জ্যাকের সঙ্গে একটা বাড়ি বানাচ্ছে, খুব চমৎকার একটা বাড়ি।

জ্যাকও ঘুমিয়ে পড়ে। শিগগিরই গুল্মের ঝোপের নিচে যে খরগোশেরা থাকতো ওরা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে এবং অবাক হয়ে ঘুমন্ত বাচ্চাগুলোকে উঁকি মেরে দেখতে থাকে। ওরা আবার কারা?

তবু বাচ্চাদের নড়তে না দেখে, খরগোশেরা আগের মতোই সাহস নিয়ে খেলতে শুরু করে। এমনকি একটা খরগোশ একবার ভুল করে মাইকের ওপর উঠে এলেও পুঁচকে ছেলেটা তা জানতেও পারে না। সে অনেক আগেভাগেই ঘুমিয়ে পড়েছে!

৫. বাড়ি বানানো
দ্বীপে প্রথম ভোরে ঘুম থেকে জেগে ওঠা অনেক মজার! জ্যাক সবার আগে জেগে ওঠে। কাছেই একটা শরালির জোরালো সুর শুনতে পেয়ে সে লাফিয়ে বিছানা ছাড়ে।

মনে রেখো তুমি এটা কীভাবে করলে, শরালিটা বলে, মনে রেখো তুমি এটা কীভাবে করলে!

জ্যাক দাঁত বের করে হাসে। আমি মনে রাখব কীভাবে এটা করলাম ঠিক আছে! সে গাইতে থাকা শরালিটাকে বলে। এই মাইক! ওঠো! সূর্য তো একেবারে মাথার ওপর উঠে পড়েছে!

মাইক উঠে বসে। প্রথমে সে মনেই করতে পারে না এখন কোথায় আছে। এরপর মুখ জুড়ে চওড়া একটা হাসি খেলে যায়Ñওরা সবাই এখন রহস্য দ্বীপে! খুব সুন্দর নিখুঁত একটা দ্বীপে!

পেগি, নোরা! উঠে পড়ো! সে ডাকে। মেয়েরা জেগে ওঠে এবং শিগগিরই উঠে বসে। ওরা এখন কোথায় আছে? সবুজ এই শোবার ঘরটা কোথা থেকে এলোÑআরে, এটাতো ওদেরই রহস্য দ্বীপের লতা-গুল্মের বিছানা!

শিগগিরই চারটে শিশুর সবাই ঘুম থেকে জেগে ওঠে। জ্যাক তাদের জিনিসপত্র গোছগাছে সাহায্য করে এবং হ্রদে গোসল করতে নিয়ে যায়। এক কথায় চমৎকার, তবে লেকের পানি কিছুটা শীতল বলে মনে হয়। কারও কাছেই তয়লা না থাকায়, পুরাতন একটা ন্যাকড়া দিয়ে শরীর মোছার পর বাচ্চাদের সবার ভয়ানক ক্ষুধা লাগে।
 কিন্তু জ্যাক তখন ব্যস্ত। সে তার ছিপ নিয়ে বসে আছে। ওরা গোসল সেড়ে তীরে উঠে আসার পরও, তাকে বড়শির নড়াচড়ার দিকে নজর রাখতে দেখা যায়। খাড়ির বালু তীরে চমৎকার চারটে ট্রাউট তুলে এনে, আগুন জ্বেলে রান্না করতে তার খুব একটা সময় লাগে না।  

মাইক চা বানাবার জন্য কেটলি ভরতে যায়। পেগি বস্তা থেকে কয়েকটা বড় বড় আলু বের করে এবং পেড়াবার জন্য আগুনে ফেলে। জ্যাক স্টোররুম থেকে ফ্রায়িং-প্যান এনে মাছ ভাজবার জন্য তাতে একটুকরো মার্জারিন দেয়। কাজটা তার খুব ভালো করেই জানা।

বুঝতে পারছি না তুমি ছাড়া আমাদের কী যে হতো, জ্যাকের দিকে তাকিয়ে, মাইক বলে। আমি কীভাবে সকালের নাস্তা করতাম!

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।