ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩২)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩২) রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩২)

আগের দিনের লোকেরা ফাঁকা ভরাটে কাদা ব্যবহার করতো আর শুকিয়ে শক্ত করে নিতো, জ্যাক বলে। কিন্তু আমার মনে হয় না দ্বীপে কোনো কাদা পাওয়া যাবে, তাই শুকনো লতা-গুল্ম দিয়েই কাজটা সারতে হবে। খুব ভালোভাবে কাজটা করতে হবে। উইলোর যে গুড়িগুলো পুতেছি সেগুলো থেকে গাছ জন্মাবার পর তাতে পাতা এসে দেয়ালটাকে আরো পুরু আর ভরাট করে তুলবে।

কীভাবে বুঝলে- গুড়িগুলো থেকে গাছ হবে? অবাক হয়ে মাইক জিজ্ঞেস করে। ডাল থেকে তো আর গাছ হতে পারে না, তাই না! 
জ্যাক দাঁত বের করে হাসে।

‘উইলো’র ডালে হয়! সে বলে। গাছ থেকে একটা উইলো’র ডাল কেটে দেখতে পারো, তারপর ওর মুকুল আর পাতা ছেটে, মাটিতে পুঁতে দিলেই দেখতে পাবে, শেকড় বা অঙ্কুর না থাকলেও- সেটা আপনাআপনি একটা উইলো গাছ হিসেবে বেড়ে উঠবে! উইলো প্রাণশক্তিতে ভরপুর, আর তা থেকে তুমি সেটা তাড়াতে পারবে না!
 
‘ভালো, তাহলে আমাদের এই বাড়িটা সারাবছরই বাড়তে থাকবে, তাহলে! নোরা চেঁচিয়ে ওঠে। কী মজার!
আমার কাছেও চমৎকার বলেই মনে হচ্ছে! পেগি বলে। জীবন্ত জিনিস আমার খুব পছন্দ। আমার ওপর বেড়ে উঠছে, এমন একটা ঘরে থাকতে আমার খুব ভালো লাগবে-শেকড়-বাকড়, অঙ্কুর আর পাতা ছাড়ছে! আমাদের এই বাড়িটাকে তাহলে কী নামে ডাকা যায়, জ্যাক?
উইলো বাড়ি! জ্যাক বলে। এর জন্য সেরা নাম!
খুব ভালো একটা নাম, পেগি বলে। আমার পছন্দ হয়েছে। এখানকার সবকিছুই আমার প্রিয়। খুব সুন্দর একটা জায়গা। ঠিক আমাদের মনের মতো এবং আমাদের রহস্য দ্বীপের উপযোগী। সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা!
যদি খাবার জন্য কিছু থাকে! মাইক বলে। তাকে দিনের প্রতিটা ঘণ্টায় ক্ষুধার্ত দেখায়। এই রোমাঞ্চের একটা জিনিসই আমার অপছন্দ!
ঠিক বলেছ, জ্যাক বলে। খাবার জোগাড় করতে হবে। ভেবো না। যে করেই হোক একটা উপায় খুঁজে বের করা যাবে। !
সেই রাতে আলু ছাড়া খাবার আর কিছুই বাকি থাকে না। জ্যাক জানায় অন্ধকার নামার সঙ্গে সঙ্গে সে নৌকায় করে পুরাতন খামারে গিয়ে দেখে আসবে খাবার-দাবার কিছু পাওয়া যায় কিনা।  
তাই সে নৌকা ভাসায়। সঙ্গে একটা মোমবাতি নেয়, তবে ধরায় না এই ভয়ে যদি সেই আলোতে তাকে দেখা যায়।  
আমার জন্য অপেক্ষা করো, অন্যদের সে বলে, এবং ছোট একটা আগুন জ্বালিয়ে রেখো- বড় নয়, যদি কেউ ওর আলো দেখে ফেলে।

অন্য তিনজন ধৈর্যের সঙ্গে জ্যাকের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকে। সময়টা খুব লম্বা বলে মনে হয়। নোরা পুরাতন চাদরটার ওপর টানটান হয়ে শুয়ে, ঘুমিয়ে পড়ে। তবে মাইক আর পেগি জেগে থাকে। চাঁদ ওঠার পর ওরা চারপাশ আলোকিত হতে দেখে। জোছনার আলোয় রহস্য দ্বীপটিকে আবারও রহস্যময় বলে মনে হতে থাকে। গাছের নিচে কালো কালো ছায়ারা প্রসারিত হয়। রাতের আঁধারের মতোই বালির ওপর হামাগুড়ি দিয়ে জলও ওদের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে, তবে দূরের চাঁদের আলোয় তা রূপালি দেখায়। উষ্ণ একটা রাত, গায়ে চাদর জড়িয়ে না রাখার পরও বাচ্চাদের শীত লাগে না।  

বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ শুনতে পাওয়ার আগে বেশ কয়েকটা ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। মাইক জলের কিনারায় ছুটে যায় এবং অপেক্ষা করতে থাকে। চাঁদের আলোয় জলের ওপর দিয়ে খুব মৃদুমন্দভাবে একটা নৌকা এগিয়ে আসতে দেখে। সে জ্যাককে ডাকে।  
হ্যালো, জ্যাক তুমি! তুমি ঠিক আছ তো?
হুম, জ্যাকের গলার স্বর। আমি প্রচুর খবরও সঙ্গে এনেছি!

চলবে...

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।