ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৯)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১১ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৯) রহস্য দ্বীপ

[পূর্ব প্রকাশের পর]

জ্যাক লণ্ঠন জ্বালায় এবং সেটা নৌকার সামনে বেঁধে দেয়। চারপাশে গাঢ় অন্ধকার, তাই আলো জ্বেলে সে দেখতে চাইছে কোনদিকে যাবে। এরপর ওরা লেকের ওপর দিয়ে রহস্য দ্বীপের দিকে বৈঠা বাইতে শুরু করে, আর ডেইজি, সেই গাভীটা বাধ্য হয়ে তাদের পেছন পেছন আসতে থাকে।

ভালো, আমার বুদ্ধিটা কাজ করছে, খানিক বাদে জ্যাক বলে।

হুম, মাইক বলে।

তবে খুব খুশি যে পুরো পালটা নয়, কেবল একটা গরু নিয়ে যেতে হচ্ছে!
দ্বীপ দেখতে পাওয়ার আগপর্যন্ত ওদের মধ্যে আর কোনো কথা হয় না, সেটা কাছ থেকে কালো আর একটানা আবছা অবয়বে দেখা দেয়। মেয়েরা বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ শুনতে পেয়ে একটা মোমবাতি হাতে সৈকতে ছুটে আসে।

তোমরা কি গরু এনেছো? ওরা বলে।

হুম, ছেলেরা চিৎকার করে বলে। ও তো সুন্দর মতো পেছন পেছন আসলো। তবে এটা ওর পছন্দ হয়নি, অসহায় প্রাণী!

ওরা তরীটাকে টেনে সৈকতে তোলে এবং তারপর ঠক্ ঠক্ করে কাঁপতে থাকা ভীত গরুটিকে টেনে তোলে। জ্যাক ওর সঙ্গে আদুরে গলায় কথা বলে এবং ভয়ে অবাক হয়ে গরুটা ওর গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। জ্যাক মাইককে একটা বস্তা আনতে বলে এবং ঠাণ্ডা আর ভেজা থাকায় গরুর গা মোছার কাজে তার সঙ্গে হাত লাগাতে বলে।

আজ রাতের জন্য ওকে আমরা কোথায় রাখবো? মাইক জিজ্ঞেস করে।

মুরগির উঠানে, জ্যাক বলে। ও মুরগি চেনে, আর মুরগিরাও ওকে চেনে। ওখানে প্রচুর ফার্ন আর গুল্ম রয়েছে। আমরা ওর শোওয়ার জন্য মুঠো করে আরও কিছুটা দিয়ে আসতে পারবো। শিগগিরই গরম আর আরাম বোধ করবে। মুরগির কক্ কক্ ডাকও ওর খুব পছন্দ।
তাই ডেইজিকে মুরগির উঠানে নিয়ে রাখা হয়। সেখানে বিরক্ত মুরগির চেঁচামেচির মধ্যে আরামে উষ্ণ ফার্নের ওপর শুয়ে পড়ে।

মেয়েরা গরু দেখে খুবই উত্তেজিত বোধ করে। মাইক আর জ্যাক বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে পড়ার পরও ওরা গরু আনার ঘটনাটা তাদের কাছ থেকে বার বার শুনতে চায়।

জ্যাক! আজ রাতে তোমাকে উদ্ভট মোটা দেখাচ্ছে! জ্যাকের গায়ে আলো ফেলতে মোমবাতিটা দুলিয়ে, হঠাৎ-ই নোরা বলে ওঠে। অন্যেরাও ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায়। হ্যাঁ, ওকে অনেক বিশাল দেখাচ্ছে!

তুমি কি কিছু একটা গিলে ফেলেছ? চিন্তিত স্বরে পেগি জিজ্ঞেস করে। জ্যাক প্রচণ্ড জোরে হেসে ওঠে।

না তো! সে বলে। একটা বাক্সে আমি আমার কিছু কাপড় খুঁজে পেয়েছি এবং সেগুলো সঙ্গে এনেছি। ওগুলো বয়ে আনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো গায়ে চাপিয়ে নিয়ে আসা, আমি সেগুলোই পরে আছি। তাই আমাকে এতোটা মোটা বলে মনে হচ্ছে!

ওরা সবাই এনিয়ে খুব হাসাহাসি করতে থাকায় সবগুলো কাপড় খুলতে তার অনেক সময়ের দরকার হয়। পেগি ওগুলোতে ফুটো দেখতে পায় এবং বাক্সসহ তার সেলাইয়ের জিনিসপত্র আনতে পারায় খুব খুশি হয়। সে ওগুলো সুন্দরভাবে সারিয়ে তোলে! এমনকি কম্বলটা পর্যন্ত সেলাই করে শীতের রাতে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে।

আকাশের ওখানে ওই মনোরোম আলোটা কিসের? আঙুল দিয়ে পুব দিকটা দেখিয়ে নোরা বলে। দেখো!

বোকা কোথাকার! ভোর হচ্ছে! জ্যাক বলে। দিনের আলো ধেয়ে আসছে! এসো, আমাদের ঘুমাতে যেতে হবে। দারুণ একটা রাত পার করলাম আমরা!

চলবে...

ইচ্ছেঘুড়ি

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।