বাঘ: আহা আপনি এতো চালাক হয়েও বোকার মতো কথা বলছেন কেন? পেটে ক্ষুধা থাকলে কী কখনো ঘুমানো যায়? আপনার পেটে ক্ষুধা থাকলে পারবেন ঘুমাতে?
শিয়াল: তা বটে। কথাটি আমি বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম।
বাঘ: না। বুঝতে পারছি আপনি আমাকে নিয়ে খুব চিন্তা করছেন। কিন্তু আমি গরুর লেজ খাই না।
শিয়াল: তাহলে গরু খেতে পারেন!
বাঘ: হ্যাঁ, সেটা অবশ্যই হতে পারে। কিন্তু গরুর সন্ধান করা তো এখন সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। বর্তমানে আমার যা অবস্থা, শিকার করতে যাওয়া প্রায় অসম্ভব।
শিয়াল: ইয়ে মানে বলছিলাম কী রাজা মশাই, আসার পথে একটা গরু দেখে এলাম, লাল গরু, চাঁদিতে আবার সাদা ছোপ আছে, ভারি সুন্দর দেখতে, একেবারে যেন শিল্পীর তুলির আঁচড়ে আঁকা;- কুকুর আর শকুনরা ঠোকরাঠুকরি করছে, কিন্তু ওরা গরুটির চামড়া ছিঁড়তেই পারছে না, এখনো বেশ টাটকা আছে...
বাঘ: এসব ফালতু কথা বাদ দিন পণ্ডিতজ্বি! দুপুর পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে আমার কোনো অসুবিধা হবে না।
শিয়াল: আচ্ছা তাহলে আমি বরং যাই।
বাঘ: বিদায়।
৪.
শিয়াল: অ্যাই তোমরা কত পানি খাও? সূর্য কিন্তু পশ্চিম আকাশে হেলে পড়তে শুরু করেছে। একটু পরেই রাজা মশাই এসে হাজির হবেন। তোমরা তাড়াতাড়ি চলে যাও।
হরিণ: আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ পণ্ডিতজ্বি। আপনি খবর না দিলে আজ আমাদের দল থেকে একটি হরিণ খোয়া যেত। সেই একটি তো আমিও হতে পারতাম, তাই না?
শিয়াল: বটে। তাই বলে এটা ভেবো না যে, তোমরা একেবারে মুক্ত হয়ে গেছো। সাবধান থেকো। আর মনে রেখো, বাঘ যত ক্ষুধার্ত হন, তত বেশি হিংস্র হয়ে ওঠেন। বৈকালে তোমাদের সন্ধানে ঠিকই বের হবেন।
হরিণ: তখন আমরা কীভাবে নিজেদের রক্ষা করবো পণ্ডিতজ্বি?
শিয়াল: সে ব্যবস্থাও আমি করে রেখেছি। তোমরা আবার কখন আসবে পানি খেতে?
হরিণ: পড়ন্ত বিকেলে।
শিয়াল: না, তোমরা আসবে সূর্য ডোবার ঠিক আগ মুহূর্তে। সবাই শুনেছো তো?
হরিণ: জ্বি শুনেছি।
শিয়াল: এখন তোমরা আসতে পারো। তোমাদের মঙ্গল হোক।
হরিণ: ধন্যবাদ পণ্ডিতজ্বি।
শিয়াল: ধন্যবাদ।
চলবে...
বাঘমামা ঘাস খেলো (পর্ব-১) | মহিউদ্দীন আহ্মেদ
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৭
এএ